ইংরেজি ভাষা নিয়ে আমার জ্ঞান অতিশয় মর্মান্তিক। স্টক অফ ওয়ার্ডের কথা
ছেড়েই দিলাম। মাঝে মাঝে এমন সব বানান লিখে ফেলি যে ফোনের অটো কারেক্ট
ও ভাবনায় পড়ে যায়-"এইডা কোন ওয়ার্ড লিখে দিলো ছোকরা, সাজেস্ট করবো কেমনে?
দেখি নাই তো কোনোদিন!"
সেই অবস্থায় আজকের এই দুঃখ এবং ন্যাক্কার জনক ঘটনার সূত্রপাত।
আড্ডায় বসে আছি, সিনেমা নিয়ে কথা হচ্ছে।
(আগেই বলি রাখি, সিনেমা নিয়েও আমার জ্ঞান
অতিশয় সামান্য। সোনার কেল্লা, পথের পাঁচালী দেখে আমি সত্যজিৎ নিয়ে ভাষণ
বাজি করতাম {একবার উদম চাটন খেয়ে তাহাও বন্ধ করেছি}, তাই এখন আর সাহস করি না।)
কথা বাড়ছে, অত্যন্ত গভীর দিকে যাচ্ছে, সারিয়েলে হালকা
৫ মিনিটের স্টপ মেরে আবসট্রাক্ট এ ঢুকবো ঢুকবো করছে।
সেই খানেই এই গল্প শুরু-
যাই হোক আগে ঘটনা টা বলে নি। কফি হাউসে আড্ডা চলছে, সেবারই সত্যজিৎ রায়ের অস্কার
পাওয়া নিয়ে ৩ মিনিটের একটা ভাষণ মারতে গিয়ে কেস খেয়েছি বাজে রকমের। এত বকা কস্মিন কালে খাইনি।
তারপরে এসেছে উদাহরনের প্রকোপ। এইবার মোর সামলায় কে?
-
‘তুই শালা দুই-তিন-চারোস্কোপের সিনেমা না দেখেই এত বড়
কথা বললি?’ রাশিয়ান
মুভি দেখ একটু।
বা
-
‘সিনেমা তো সবাই বানায় কিন্তু সিনেমাগ্রাফি টা ই হচ্ছে
আসল। তার জন্যে দেখ আন্দ্রে পেঁপেন্সিলের সিনেমা। আহা। সূর্য কে ওই ভাবে ডিফাইন একমাত্র ওই করতে পারে।‘
(ওপরের দুজনের একজনও বর্তমান নয়, অতীত ও নয়| কাজেই গুগুল করিয়া
সময় নষ্ট করিবেন না)
আমার বিদেশী সিনেমায় দৌড় জুরাসিক পার্ক, স্পাইডারম্যান টাইপ মুভি তে। একদিন কে যেন বলল জেমস ক্যামেরন হচ্ছে শ্রেষ্ঠ পরিচালক। সার্চ মারলাম তার সিনেমা।
ও মা! টাইটানিক। কমন পড়েছে ১২ নম্বরের উত্তর।
জানতুমই না। যাই হোক। ষ্টার ওয়ার্ল্ড এ একদিন টাইটানিক নিয়ে বসলাম। এবার বুঝতেই হবে সব। সাবটাইটেল অন।
একবার ওপর দেখছি, একবার নিচে দেখছি। এতবার ওপর-নিচ ব্যায়াম
হওয়া তে চোখে বোধহয় সিক্সপ্যাক বেরিয়ে গেছিল একটু হলেই।
মন দিয়ে সিনেমা দেখছি আমি | দেখছি অলা ভুল হবে| বলা ভালো মন দিয়ে সিনেমা পড়ছি
আমি। জমে গেছে কেস। জ্যাক কি বেশ একটা জিজ্ঞাসা
করেছে রোস কে। রোস উত্তর দেয়নি। জ্যাক ওয়েট রত, আমি দ্বিগুন ওয়েটরত।
পেছন দিয়ে দরজা খোলার আওয়াজ পেলাম। আমার তখন সময় নেই এই
সব ভাবার। উত্তর দিচ্ছে না কেন!
টিভির ভেতর থেকে না, পেছন থেকে উত্তর এলো।
রোস ঠিক দিলো না, আমার মা জাস্ট একটা শব্দ বলে গেল-
ছিঃ ( পয়েন্ট টু বি নোটেড, ছি এর পর বিসর্গ আছে)
ছিঃ বললো কেন? ওপরে চোখ তুলে দেখি জ্যাক রোস চুমু খাচ্ছে। আরে বলে খাবি তো। ফ্রেঞ্চ কিসের প্রতি আমার প্রবল আকর্ষণ। শিখতেই হবে।
আমায় না বলে গোটা চুমু খেয়ে নিলো!
আর এরকম একটা মারাত্বক সিনে, খাওয়ার কোনো কারণই নেই। ঝগড়া চলেছিল, আমি মন দিয়ে পড়েছি। আর খেলেও সেই শব্দ ঢোকানো
উচিত সাবটাইটেলে। এরকম ভাবে অ-ইংরেজি দের মিসগাইড করা একদম উচিত না।
যাই হোক, মা কি ভাবলো আমাকে নিয়ে জানিনা। তবে আমি ঠিক করে নিলাম এবার থেকে বিভিন্ন রকম সিনেমা দেখবেই।
তারপর অনেকের পাল্লায় পরে হরেক রকম সিনেমা দেখেছি। কোরিয়ান, জাপানিজ, ইরানিয়ান কিন্তু ওই যে সাবটাইটেল না থাকলে আমি পুরো ডোনাল্ড ট্রাম্প,
নিজের মত যা খুশি একটা ভেবে গোটা সিনেমা টা চালিয়ে নি আর বলিয়েও নি সবাই
কে দিয়ে। মানতেই হবে।এটাই বলেছিস শালা। ক্রিয়েটিভ দর্শক যাকে বলে আর কি।
তারপর যখন শুনলাম কেস টা এরকম ছিলই না তখন বড্ড মাথা গরম হয়।
যা ভাবি তাহা হয় না, যা হয় তাহা বুঝি না।


No comments:
Post a Comment