![]() |
Cafe Positive |
যোধপুরপার্ক স্টপেজে নেমে একটু এগিয়ে বাজারের কাছাকাছি।
আমরা ব্লগটগ থেকে যখন , CAFE POSITIVE-এ এসে পৌঁছলাম তখনো রামকৃষ্ণ মিশন থেকে পাশ করা এবং United Nation এ কর্মরত কল্লোল ঘোষ, , CAFE POSITIVE-এর উদ্যোগতা এসে পৌঁছননি।
আমরা ব্লগটগ থেকে যখন , CAFE POSITIVE-এ এসে পৌঁছলাম তখনো রামকৃষ্ণ মিশন থেকে পাশ করা এবং United Nation এ কর্মরত কল্লোল ঘোষ, , CAFE POSITIVE-এর উদ্যোগতা এসে পৌঁছননি।
কাজেই আমরা আড্ডা জমালাম সুনীতি দি,
রতন দা’দের সাথে। কেমন চলছে? রিভিউ কেমন, এই সব প্রশ্নে জমে উঠলো খানিকক্ষণ। তারপর
একটা সেলফি তুলতে গিয়েই ভারতীয় সংবিধান সামনে এসে দাঁড়ালো আমাদের।
ভারতের ‘প্রাইভেসি পলেসি অ্যাক্ট’ অনুযায়ী HIV+ মানুষের ছবি স্যোসাল নেটওয়ার্কে দেওয়া আইনত অপরাধ। সুতরাং মুলতুবী রাখতেই হল।
এরই মধ্যে এসে পৌঁছলেন কল্লোল ঘোষ। পরিচয় পর্ব শেষ হওয়ার পরই শুরু করলেন , CAFE POSITIVE-এর গল্প।
![]() |
কল্লোল ঘোষ |
ব্লগটগ
hiv+ বা বলা ভালো সমাজের ব্রাত্য কিছু মানুষকে নিয়ে
এর আগে কি কলকাতায় কোনো ক্যাফে হয়েছে?
কল্লোল ঘোষ
কলকাতায় কেন, CAFE POSITIVE ভারতবর্ষে
প্রথম ক্যাফে যারা কয়েকজন hiv+ ছেলে-মেয়েকে
নিয়ে ক্যাফে শুরু করলো।
ব্লগটগ
শুরুটা কেমন ভাবে হয়েছিল?
কল্লোল ঘোষ
১২ বছর আগে 'অফার' নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হয়ে আমরা কলকাতায় দুটো হোম শুরু করি।
'আনন্দঘর' এবং 'সাঁঝবাতি'।
১২ বছর আগে 'অফার' নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হয়ে আমরা কলকাতায় দুটো হোম শুরু করি।
'আনন্দঘর' এবং 'সাঁঝবাতি'।
‘আনন্দঘর’, মেন্টালি চ্যালেঞ্জড বাচ্চাদের জন্যে এবং স্যোশালি চ্যালেঞ্জড
বাচ্চাদের জন্যে, অর্থাৎ যাদের বাবা-মা আছে কিন্তু ওরা জানে না তারা কে?
তাদেরকে নিয়েই আমাদের আনন্দঘরের জার্নি
শুরু হয়। তাদেরকে পড়ানো, বড় করা সমস্ত কিছুই। এরপর জাপান গভর্নমেন্ট থেকে ফান্ডিং করে
একটা বেকারি ইউনিট করা হয় আনন্দ ঘরে। সেখানেই কিছু কাজ শুরু হয় ওদের নিয়ে।
কিন্তু এসবের পরেও ক্রমাগত একটা ভাবনা থেকেই যাচ্ছিল।
কিন্তু এসবের পরেও ক্রমাগত একটা ভাবনা থেকেই যাচ্ছিল।
সেই সময় যদিও ওদের স্কুলে ভর্তির একটা
বড় অসুবিধা ছিল, এখন তো ‘রাইট টু এডুকেশন’ হয়ে গেছে। কিন্তু তাতেও যেটা আনফরচুনেট যে ওদেরকে
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই স্কুলের বাইরে বসিয়ে রাখা হয়। তারসাথে হসপিটালের সমস্যা তো আছেই।
প্রসঙ্গত বলে রাখি প্রতিবছর ভারতবর্ষে
৮০ হাজারের কিছু বেশি শিশু hiv নিয়ে জন্মায়। এদের আমরা ‘ইনোসেন্ট ভিক্টিম’ বলি।
আমি বিশ্বাস করি এরা আমাদের সন্তান,
আর এদের সমাজে দাঁড় করানোর দায়িত্বটা আমাদেরকেই নিতে হবে আর সমাজের প্রান্তিক মানুষ
যারা তারা আমাদের কাছ থেকে ব্রাত্য হতে হতে ক্রমেই কনফিডেন্স হারিয়ে ফেলছে তাদেরকেই
যদি কিছু একটা ভাবে তুলে ধরা যায়!
২০০৬ সাল নাগাদ, জার্মানির মিউনিখে
আমি এরকম একটা ক্যাফে দেখি , যেখানে প্রান্তিক মানুষেরা গোটা ক্যাফেটা চালায় এবং এই
ক্যাফেটা আমাকে ভীষণ ভাবে আকর্ষণ করে। সেই ভাবনা থেকেই ওদের সবাইকে সাথে নিয়েই ‘ক্যাফে
পজিটিভ’।
![]() |
Kallol Ghosh and his friend at cafe positive |
এরমধ্যেই এক রাউন্ড কফি চলে এলো আমাদের
সবার জন্যে। সুতরাং আড্ডার রেশ আরও খানিক বেড়ে গেল আমাদের।
ব্লগটগ
২০০৬ থেকে ২০১৮, মানুষের
মনোভাব, hiv আক্রান্তদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি কি কিছু পাল্টেছে? মানে এই গোটা লড়াইটা
কি শুধুই আপনার একার নাকি পাশে পেয়েছেন আরও কিছু মানুষকে?
কল্লোল ঘোষ
একদমই একা নয় বরং বলা
ভালো সবাইকে পাশে না পেলে হয়তো এই cafe positive হয়েই উঠতো না। কলকাতায় প্রায় ১৬০০ মানুষ এখন আমাদের সাথে আছেন। সেখানে শিয়ালদা-রানাঘাট
লোকালের চকলেট বিক্রেতা যেমন আছে তেমনই আছে প্রতিষ্ঠিত চ্যাটার্ড একাউন্টেন্ট।
আসলে আমরা শুধু মানুষের খারাপ দিকটাই
দেখি, ভাবি মানুষ বুঝি শুধুই খারাপ স্বার্থপর। কিন্তু আমরা কোনোদিনই ভেবে দেখিনা যে
সময়টাই এখন ভীষণ ফাস্ট, ভীষণ ভয়ঙ্কর।
তবু বিশ্বাস করো, এখনও সবাই সুযোগ পেলেই নিজেদের মতন করে কিছু একটা করার চেষ্টা করে।
তবু বিশ্বাস করো, এখনও সবাই সুযোগ পেলেই নিজেদের মতন করে কিছু একটা করার চেষ্টা করে।
এমনকি ক্যাফের প্রায় সব জিনিসই কারোর
না কারোর উপহারে দেওয়া। কেউ দিয়েছেন এসি, মাইক্রোওয়েভ আবার রোটারি ক্লাব থেকে পেয়েছি ১ লক্ষ
৭০ হাজারের কফি মেসিন। সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত একটি ছবিতে এই বিষয়টা দেখানো হয়েছে। 'আনন্দঘর' নিয়ে, 'CAFE POSITIVE' নিয়ে মিডিয়া নিজে থেকে লেখালেখি করছে। এরচেয়ে আনন্দের আর কী বা
হতে পারে!
তবে এখনও অনেকেরই ধারনা আছে ‘সুইট স্যালাইভা’
থেকেই hiv হয় এবং ছড়ায়, তাদেরকে আমি বারবার বলতে চাই - Hiv একটা ভাইরাস আর এইডস একটা অসুখ,
দুটোর মধ্যে কোনো সম্পর্কই নেই।
সুতরাং আপনারা নির্ভয়ে এগিয়ে আসুন, সবাই মিলে ওদের আর ব্রাত্য না রেখে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে যাই সামনের দিকে।
সুতরাং আপনারা নির্ভয়ে এগিয়ে আসুন, সবাই মিলে ওদের আর ব্রাত্য না রেখে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে যাই সামনের দিকে।
ব্লগটগ
CAFE POSITIVE কি সেক্ষেত্রে
একটা বিজনেস মডেল?
কল্লোল ঘোষ
ক্যাফে-পজিটিভ কোনো বিজনেস
ভেঞ্চার নয়, ক্যাফে-পজিটিভ একটা ক্যাটালিস্ট মাত্র।
ব্লগটগ
CAFE POSITIVE শব্দটা কি
Hiv পজিটিভ থেকেই অনুপ্রাণিত?
কল্লোল ঘোষ
একদমই নয়। বরং উল্টোটাই।
আমরা চাই CAFE POSITIVE যেন সবসময় পজিটিভ আলোচনা উঠে আসে, সৃজনশীল কথাবার্তা হয়, নতুন
আড্ডা হয় সবার মধ্যে।
সেখানে রাজনীতি, খেলা, সিনেমা সবকিছুর আলোচনাই হতে পারে কিন্তু সবের মধ্যে যেন একটা পজিটিভিটি থাকে।
সেখানে রাজনীতি, খেলা, সিনেমা সবকিছুর আলোচনাই হতে পারে কিন্তু সবের মধ্যে যেন একটা পজিটিভিটি থাকে।
![]() |
Cafe Positive Adda-Zone |
ব্লগটগ
তবে Hiv পজিটিভ জানার পর
যদি ব্যাবসায় কোন ক্ষতি হয়?
কল্লোল ঘোষ
আমি তো আগেই বলেছি, CAFE
POSITIVE শুধু ব্যাবসার জন্যে নয় সমাজের ব্রাত্য এবং প্রান্তিক
মানুষদের মুলস্রোতে ফিরিয়ে আনার জন্যেই তৈরি হয়েছে।
লোকে জেনে আসুক যে- হ্যাঁ এরা hiv পজিটিভ। দয়া বা অনুকম্পা দেখানোর জন্যে নয়, কফি খাওয়ার জন্যেই আসুন।
ব্লগটগ
CAFE POSITIVE এর তবে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী কী?
কল্লোল ঘোষ
আমি গোটা দায়িত্বটাই ছেড়ে দিয়েছি ওদের ওপর। ওরা এবং আপনারা মিলেই ঠিক করবেন CAFE POSITIVE এর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা। এই যেমন গতকাল সকালে এসে এক ভদ্রলোক বললেন সকালে ব্রেকফাস্টে যদি স্যান্ডউইচ রাখা যায় বা একদল কলেজ স্টুডেন্ট এসে রিকোয়েস্ট করেছে ম্যাগি রাখবার জন্যে। আমরা সমস্ত কিছুই মাথায় রেখে চলছি। আসলে, ওরাও তো এইসবে একবারেই নতুন। তাই সবাই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলে ওদের পক্ষেও ব্যাপারটা অনেক সহজ হয়ে যায়।
যেমন, যোধপুরপার্ক এলাকার স্থানীয় মহিলাদের আমরা রিকোয়েস্ট করেছি যাতে ওনারা হোমমেড স্ন্যাক্স আমাদের দিতে পারে। ফ্রি-তে নয়, তাদের কাছ থেকে আমরা কিনেই বিক্রি করবো CAFE POSITIVE থেকে। যাতে গোটা ব্যাপারটায় আমরা সবাই লাভবান হই, আমরা সবাই একসাথে আনন্দে মেতে উঠতে পারি।
ব্লগটগ
বাহ, অসাধারন! আমরাও ব্লগটগ থেকে বা বলা ভালো কলকাতায় বিভিন্ন গ্রুপ এখন প্রচুর ইভেন্ট করছে। কবিতা, গান, গল্প, আড্ডার। সেক্ষেত্রে CAFE POSITIVE আমাদের জন্যে একটা প্রিয় ডেস্টিনেশন হতেই পারে?
কল্লোল ঘোষ
অবশ্যই। যেকোনো পজিটিভ কাজের জন্যে CAFE POSITIVE is always open.
ব্লগটগ
মানুষদের মুলস্রোতে ফিরিয়ে আনার জন্যেই তৈরি হয়েছে।
লোকে জেনে আসুক যে- হ্যাঁ এরা hiv পজিটিভ। দয়া বা অনুকম্পা দেখানোর জন্যে নয়, কফি খাওয়ার জন্যেই আসুন।
ব্লগটগ
CAFE POSITIVE এর তবে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী কী?
কল্লোল ঘোষ
আমি গোটা দায়িত্বটাই ছেড়ে দিয়েছি ওদের ওপর। ওরা এবং আপনারা মিলেই ঠিক করবেন CAFE POSITIVE এর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা। এই যেমন গতকাল সকালে এসে এক ভদ্রলোক বললেন সকালে ব্রেকফাস্টে যদি স্যান্ডউইচ রাখা যায় বা একদল কলেজ স্টুডেন্ট এসে রিকোয়েস্ট করেছে ম্যাগি রাখবার জন্যে। আমরা সমস্ত কিছুই মাথায় রেখে চলছি। আসলে, ওরাও তো এইসবে একবারেই নতুন। তাই সবাই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলে ওদের পক্ষেও ব্যাপারটা অনেক সহজ হয়ে যায়।
যেমন, যোধপুরপার্ক এলাকার স্থানীয় মহিলাদের আমরা রিকোয়েস্ট করেছি যাতে ওনারা হোমমেড স্ন্যাক্স আমাদের দিতে পারে। ফ্রি-তে নয়, তাদের কাছ থেকে আমরা কিনেই বিক্রি করবো CAFE POSITIVE থেকে। যাতে গোটা ব্যাপারটায় আমরা সবাই লাভবান হই, আমরা সবাই একসাথে আনন্দে মেতে উঠতে পারি।
ব্লগটগ
বাহ, অসাধারন! আমরাও ব্লগটগ থেকে বা বলা ভালো কলকাতায় বিভিন্ন গ্রুপ এখন প্রচুর ইভেন্ট করছে। কবিতা, গান, গল্প, আড্ডার। সেক্ষেত্রে CAFE POSITIVE আমাদের জন্যে একটা প্রিয় ডেস্টিনেশন হতেই পারে?
কল্লোল ঘোষ
অবশ্যই। যেকোনো পজিটিভ কাজের জন্যে CAFE POSITIVE is always open.
ব্লগটগ
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এবং পুরো CAFE POSITIVE টিমকে। তবে শেষ করবার আগে CAFE POSITIVE নিয়ে একটা শেষ বাইট?
কল্লোল ঘোষ
তাই আমি চাই লাস্ট বাইটটা আমি নয় তোমরাই
কফি খেতে খেতে দিও, কারন তোমাদের ভিউয়ারসের কাছে তোমরাই প্রমান করতে পারবে যে এই কফিটা
খেলে তোমাদের hiv হয়ে যাবে না।
![]() |
Inside Cafe Positive |
আমরা সেই ‘লাস্ট-বাইট’ তুলে
রাখলাম আপনাদের জন্যে। অবশ্যই জানাবেন একবার ঘুরে এসে।
আসলে এত ভালো একটা কাজে নিজেরাও কিছু করে উঠতে পারলে ভীষণ গর্বিত লাগে নিজেদের। তাই বেরিয়ে এসেও পিছুটান থেকে গেল ক্যাফে পজিটিভের জন্যে। একটাই শুধু শূন্য রয়ে গেল ওদের সাথে একটা সেলফি তুলে স্যোশাল মিডিয়ায় দিতে পারলাম না বলে।
চলুন, আমরা সবাই এগিয়ে আসি যাতে আমাদের মন এবং ভারতীয় সংবিধান দুইই পাল্টে যায় ওদের জন্যে।
cafe positive পথিকৃৎ হয়ে থেকে
যাক আমাদের।
![]() |
Cafe Positive Menu |
No comments:
Post a Comment