বিশ্ব ফুটবলের ইতিহাসে সবথেকে প্রাচীন ফুটবল খেলিয়ে
দেশদুটির মধ্যে একটি হল "দ্য থ্রি লায়ন্স" ইংল্যান্ড। ফুটবলজগতকে এ ওবদি
অনেক কিংবদন্তী খেলোয়াড় উপহার দিয়েছে।যেমন,পিটার শিলটন,ডেভিড বেকহ্যাম,ওয়েন রুনি
ইত্যাদি। এবার,বিশ্বকাপের যোগ্যতাঅর্জন পর্বের ম্যাচগুলিতে যথার্থই সিংহের ন্যয়
বিক্রম দেখিয়ে স্লোভাকিয়া,স্লোভেনিয়ার মত দেশকে টপকে গ্রুপে প্রথম স্থান অর্জন
করার সাথেই সরাসরি রুশ বিশ্বকাপের জন্য ছাড়পত্র পেয়ে যায়।
বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড: ১৯৫০ সালে ইংল্যান্ড সর্বপ্রথম
বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করে।যদিও,গ্রুপস্টেজেই তাদের দৌড় শেষ হয়ে
যায়।এরপর,১৯৫৪,১৯৫৮,১৯৬২,১৯৬৬,১৯৭০,১৯৮২,১৯৮৬,১৯৯০,১৯৯৮,২০০২,২০০৬,২০১০,২০১৪ সালে
বিশ্বকাপে তারা অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে তাদের পক্ষে সর্বশ্রেষ্ঠ ফলাফল হল,১৯৬৬
সালে নিজের দেশের মাটিতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে জিওফ হার্স্টের বিতর্কিত গোলে তৎকালীন
"জুলে রিমে কাপ" জয়।
এবার একনজরে দেখে নেওয়া যাক ইংল্যান্ডের জাতীয় ফুটবল
দলের খুঁটিনাটি ---
কোচ:ক্রিস্টাল প্যালেস,অ্যাস্টন ভিলা,মিডলসব্রো তে
দীর্ঘদিন খেলা প্রাক্তন ইংরেজ ফুটবলার গ্যারেথ সাউথগেট এবারের ইংল্যান্ডের জাতীয়
দলের মূল প্রশিক্ষক।ইনি মিডলসব্রো ক্লাব ছাড়াও ইংল্যান্ডের অনুর্ধ্ব - ২১ জাতীয়
দলকেও অতীতে কোচিং করিয়েছেন।
গোলরক্ষক : এই বিভাগে তরুণ মুখেরই প্রাধান্য বেশি।
ক্লাব ফুটবলে স্টোক সিটিতে খেলা জ্যাক বাটল্যান্ড সম্ভবত প্রথম পছন্দ হিসেবে রুশ
বিশ্বকাপে তেকাঠির নীচে থাকবেন। অতিরিক্ত হিসেবে জর্ডান পিকফোর্ড, নিক পোপ এর
মধ্যেই বেছে নেওয়া হবে। তবে,এনারা আন্তর্জাতিক ফুটবলে নতুন মুখ হলেও,ক্লাব ফুটবলে
অত্যন্ত ধারাবাহিক।
বাদ-দীর্ঘ দিনের ইংরেজ তেকাঠির অতন্দ্র প্রহরী অভিজ্ঞ
জো হার্ট এবার দলের বাইরে অফ ফর্মের জন্য।এছাড়াও,ক্লাব ফুটবলে ভালো খেলা ফ্রেসার
ফস্টার(সাউদাম্পটন),টম হিটন(বার্নলে) রাশিয়াগামী দলে জায়গা পাকা করতে ব্যর্থ।
রক্ষণ : ক্লাব ফুটবলে ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলা
ডিফেন্ডারদেরই জাতীয় দলে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।সেন্টার ব্যাক হিসেবে অভিজ্ঞ
গ্যারি কেহিল(চেলসি) এর পাশাপাশি জন স্টোনস(ম্যাঞ্চেস্টার সিটি),ফিল
জোন্স(ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড), হ্যারি ম্যাগুয়ের(লেস্টার সিটি)র মত নতুন মুখ দেরও
নেওয়া হয়েছে।
রাইট ব্যাকে ট্রেন্ট অ্যালেকজান্ডার আর্নল্ড
(লিভারপুল), কিরন ট্রিপ্য়ার(স্পারস) এর মত তরুণদের পাশাপাশি অভিজ্ঞ কাইল
ওয়াকার(ম্যাঞ্চেস্টার সিটি)কেও দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
লেফট ব্যাকে অ্যাশলে ইয়ং(ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড),
ফ্যাবিয়ান ডেল্ফ(ম্যাঞ্চেস্টার সিটি),ড্যানি রোস(স্পারস) এর মত অভিজ্ঞরা জায়গা করে
নিয়েছেন।
বাদ-অভিজ্ঞ রায়ান বার্ট্র্যান্ড এবার দলে জায়গা করে
নিতে পারেন নি।প্রতিভাবান জেমস টারকোস্কি,মাইকেল কিন সম্ভবত চুড়ান্ত দলে থাকছেন
না।
মাঝমাঠ: এক কথায় বলতে গেলে "অভিজ্ঞতা ও
তারুণ্যের আশ্চর্য সমন্বয় হল ইংল্যান্ডের মাঝমাঠ"। জর্ডান
হেন্ডারসন(লিভারপুল), এরিক ডায়ার(স্পারস),ডেলে আলি(স্পারস)র পাশাপাশি রুবেন লফ্টাস
শিক(ক্রিস্টাল প্যালেস),জেসে লিংগার্ড (ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড) এর মত প্রতিভাবান
তরুণদেরও সু্যোগ দেওয়া হয়েছে।
বাদ-এই মরশুমে আগুনে ফর্মে থাকা অ্যালেক্স অক্সলেড
চেম্বারলেনের চোটের জন্য দলে না থাকা ইংল্যান্ডের কাছে বড় ধাক্কা।এছাড়াও,জ্যাক উইলশেয়ার,জেমস
মিলনার এই মরশুম জুড়ে ভাল প্রদর্শন করেও দলে জায়গা করে নিতে ব্যর্থ।
আক্রমণভাগ : ইংল্যান্ডের জাতীয় দলের অন্যতম ভরসার
জায়গা এই আক্রমণভাগ। তার প্রধান কারণ, হ্যারি কেনের মত স্ট্রাইকারের দলে উপস্থিতি
এবং চোট সারিয়ে তার মাঠে ফেরা।তাছাড়াও,জেমি ভার্ডি(লেস্টার সিটি),রহিম স্টার্লিং
(ম্যাঞ্চেস্টার সিটি),মার্কাস র্যাশফোর্ড(ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড) ছাড়াও অভিজ্ঞ
ড্যানি ওয়েলবেক(আর্সেনাল) সম্ভবত রাশিয়াগামী দলে থাকছেন।
বাদ-অভিজ্ঞ জার্মেইন ডেফো এবং চোটপ্রবণ ড্যানিয়েল
স্টারিজকে এবার দলের বাইরে রাখা হয়েছে।
শক্তি:প্রতি বিভাগে একাধিক অভিজ্ঞ খেলোয়াড়ের পাশাপাশি
প্রতিভাবান খেলোয়াড়ের উপস্থিতি ইংল্যান্ডের শক্তি অনেকটাই বৃদ্ধি
করেছে।তাছাড়াও,ক্লাব ফুটবলে বেশিরভাগ খেলোয়াড়ের ফর্মে থাকা ইংল্যান্ডের পক্ষে
বাড়তি সুবিধার।
দূর্বলতা:অনভিজ্ঞতা এবারের ইংল্যান্ড জাতীয় দলের কাছে
অন্যতম চিন্তার কারণ। তাছাড়াও,চোট এবং অফ ফর্মের কারণে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ
খেলোয়াড়ের দলে না থাকা দলকে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। কোচ গ্যারেথ সাউথগেটের বড়
প্রতিযোগিতায় কোনো দলকে কোচিং করানোর অনভিজ্ঞতা ইংল্যান্ড থিঙ্কট্যাঙ্কের
মাথাব্যথার অন্যতম কারণ।
সম্ভবনা:কোয়ার্টার ফাইনাল
No comments:
Post a Comment