আমার বিয়েতে বেশ কয়েক লাখ টাকার গয়না কেনা হয়েছিল, যেটা আমার সারা জীবনের সম্পদ।বিপদ-আপদের সাথী কিন্তু বিয়ের সবচেয়ে বড় পাওনা ফুলশয্যার রাতে পাওয়া ছোট্ট ডাইমন্ড রিং।সেই ডাইমন্ড রিং এর অপেক্ষায় মেসি শালাহ রা বিশ্বকাপ খেলে। তাদের সারা জীবনের কৃতি আর স্কিল ক্লাব ফুটবল মারফৎ ফুটবল দুনিয়া অবগত কিন্তু ক্লাব ফুটবল দুনিয়ার বাইরেও আরেকটা দুনিয়া আছে যারা ৪ বছর অন্তর কুম্ভকর্ণের ঘুম ভেঙ্গে ওঠে।রামায়ণের কুম্ভকর্ণের মতোই যাকে এড়ানো প্রায় অসম্ভব।গতরাত্রে এমন দুটি দেশের মধ্যে খেলা হলো যারা এতদিন কুম্ভকর্ণের নিদ্রায় ছিলো।দীর্ঘদিন ফিফার উচু র্যান্ক ধরেও ইজিপ্টের বিশ্বকাপ না খেলার সঙ্গে তুলনা করা যেতেই পারে গ্রেটেস্ট গোলকিপার লেভ ইয়াসিনের দেশের বিশ্বকাপ না খেলা।
অদ্ভূত দুটি দেশের খেলা যারা সৌন্দর্য আর প্রাচুর্যের জন্য বিখ্যাত।সারা দুনিয়া অপেক্ষা করছিল কখন Arabian Nights এর আলাদিনের মতো শালাহ্ রাশিয়ান জাসমিনকে চুরি করে নিয়ে যেতে পারে। কিন্তু না,এত পর্যন্ত কল্পনা ছিলো বাস্তবে যেটা দেখলাম সেটা আসলে ১৪টা রক্তমাংসের মানুষের বিরুদ্ধে ১৪টা রক্তমাংসের মানুষের লড়াই। এ লড়াই ধারণার,এ লড়াই স্কিলের,এ লড়াই স্ট্র্যাটেজির, এ লড়াই ঐতিহ্যের।
যে দেশের দশ লক্ষ মানুষ রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মহম্মদ শালাহ-র প্রতি আস্থা ভাজন করে তার কিয়দংশ আস্থা শালাহ-র সতীর্থরা তার প্রতি দেখালে গতরাতের ফলাফল অন্যরকম হতেই পারতো। এল নেনি আর ত্রেজেগুয়ে তাদের আবশ্যিক জেতার দিনে দেশের নতুন হিরো হতে গিয়ে নষ্ট করে দিল গোটা ইজিপ্সিয়ান খেলার ঘরানা কে। যেভাবে তারা এসেছিল শালাহ-র পায়ে ভর করে সে খেলা তারা তাদের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ধরে রাখতে সক্ষম হলনা। প্রতিকটা বল প্লেয়ার ওয়াল খেলায় অভ্যস্থ যাকে আমরা ওয়ান টু ওয়ান বলি। আমি তোমায় পাস দেবো তার মধ্যে নিজের জায়গা তৈরী করে নেবো তুমি আমায় পাসটা ফেরত দেবে। এই ফেরত দেওয়াতে লাগে সেই প্লেয়ারের সৃজনশীলতা আর ঠিক এখানেই ইজিপ্টের খেলার রিভিও শুরু এবং শেষ।যেখান থেকে শুরু ভেঙে পড়া সোভিয়েতের নতুন চাঁদ তারার গল্প আয়োজক দেশের পরের রাউন্ডে ওঠাটা যেমন প্রায় অভ্যেস।ব্যাপারটা ঠিক ততোটা সোজা নয়।না ছিল USA র কাছে, না ছিল কোরিয়ার কাছে,না রাশিয়ার কাছে।এক অদম্য জেদ অার দুর্ঘটনা গর্ভ থেকে উঠে আসা রাশিয়ার নতুন হিরো চেরিশেভ রাশিয়ার নতুন আলাদিন।সমাজের ২য় সারির নাগরিকের মতো যার বসে থাকার কথা ছিল বেঞ্চে।ড্যাজওয়েভের আকস্মিক চোটে প্রথম ম্যাচে নেমেই দুগোল।আজকের ম্যাচের সুবাদে CR 7 র সাথে এক আসনে বসে।কালকার খেলা প্রমান করে ইগোর বাইরে দাঁড়িয়ে যখন খেলা প্রাধান্য পায়,এক নতুন তারকার জন্ম হয়।ইজিপ্টের অবিচ্ছিন্ন ফুটবল,সৃজনশীলতার অভাব এবং কিং শালাহ্কে উপেক্ষা স্বয়ং কিংকে হতাশার এমন গভীরে টেনে নিয়ে যায় যে ১০-১২ টা ওয়াল খেলার চেষ্টা করার পর তিনি নিজেও হতদ্যম হয়ে পড়ে পজিশন নিতে ভুল করেন।দীর্ঘ অপেক্ষার নিদারুণ জ্বালা নিয়ে ক্লিয়পেট্রা আত্মঘাতী গোলে তার মৃত্যুর সুচনা করে।
No comments:
Post a Comment