আমার এখন একাত্তর বছর
বয়স
আমার পদক্ষেপে এখন বার্ধক্য
তবু প্রতি জন্মদিনে আমি-
নতুন উদ্যমে পথ চলি
আমার বুক বাঁধি
প্রতীক্ষায় থাকি লাল সূর্য ওঠার।
আমি ঘর সাজাই সাদা ফুল দিয়ে
এই আশাতেই শান্তি আসবে মোর ঘরে
কোন শান্তির কথা ভাবছি?
এখানে আজও আমার ঘরে ভ্রাতৃবিরোধ
এক ভাই আর এক ভাইয়ের বুকে বিদ্ধ করছে ছুরি।
তাই শান্তি চাই!
আজও আমার পাশের বাড়ির সীতা,
সম্ভ্রম বাঁচাতে খুঁজে ফেরে জটায়ুদের।
দ্রৌপদির সেই কৃষ্ণসখা বন্ধুর আজ
অভাব বড়ো বেশি,
তাই রাজপথে তাঁর বলি হয়।
কৃষ্ণর বস্ত্র পারে না,
তার লজ্জা নিবারণ করতে
আমার ঘরেই চাকরি না পাওয়া
বেকার ছেলে-উদ্বন্ধনে ঝোলে।
তবু শান্তি চাই।
যেদিন আমার নিকানো মাটির দাওয়ায়,
সোঁদা মাটির গন্ধের সাথে মিশে
যাবে জুটমিলের শ্রমিক,
সাজু মহম্মদের ভাতের আঘ্রাণ।
আমার ঘরের শিশুই এক
মূহুর্তের
নিঃস্বাস হারিয়ে আজ মৃত।
পাশের বাড়ির মতলব মিঞা
আমার মুখে তুলে দেয় ভাত।
তবু তাঁর ঘরে আজ নিরন্ন উপবাস।
আমি স্বাধীনতা বলছি!
আমি একাত্তর বছরের বৃদ্ধ
ছানি পরা ঝাপসা চোখে
সেই প্রভাতের স্বপ্ন দেখে যাই।
আমি কান পেতে শুনতে চাই,
আমার শিক্ষক ছেলের কন্ঠস্বর
সে তার মা কে বলছে-
"মা ভাত দাও।ইস্কুলে যাব।"
তার সাইকেলের ঘন্টির সঙ্গে
আমি কবে গেয়ে উঠব?
ভারতবর্ষ সূর্যের এক নাম।
আমি স্বাধীনতা বলছি।
No comments:
Post a Comment