কালিয়াচকের
ধূলিমলিন শাহী সড়কের পাশে একটা সস্তা বারে কোণের দিকে প্লাস্টিকের চেয়ার টেবিল দখল
করে বসেছে ওরা তিনজন। কপালে হাত দিয়ে প্রৌঢ় পেশল মানুষটি বসে আছেন, সামনে আধা গরম
বীয়রের গেলাস আর বাসি ছোলাসেদ্ধ। উল্টোদিকে বসে থাকা দুজন ছোকরার মধ্যে একজন
দীর্ঘকায়, কৃষ্ণবর্ণ, পেটানো চেহারা – মুখে প্রৌঢ়র আদল; আরেকজন খর্বনাসা, বেঁটে,
রোগা মঙ্গোলয়েড বৈশিষ্ট্যযুক্ত। খর্বনাসা একঢোকে গেলাসের বাংলাটুকু শেষ করে বলে
উঠলো-‘কী হল ইন্দ্রদা,নটা তো বেজে গেল, গোপাল কখন আসবে? আদৌ আসবে তো? ও শালা
আমাদের ডোবাবে না তুমি শ্যিওর?’ ধীরে ধীরে চোখ খুললেন প্রৌঢ়, আরক্ত চোখে তাকিয়ে
কাটা কাটা স্বরে বললেন-‘বাঞ্চোদ খড়্গ, তোর কাছে বাঁচার আর কিছু উপায় আছে? বাজে না
বকে চুপচাপ বসে থাক।’ তৃতীয় ব্যক্তিটি, যাকে আমরা জানবো ইন্দ্রের বড় ছেলে কালু
নামে, অধৈর্য্য হয়ে উঠে পড়লো- ‘তোমরা বসো বাবা, আমি বাইকটা নিয়ে একটু এগিয়ে দেখে
আসি।’ ঠিক সেই সময়, বারের টিমটিমে আলোর বিপরীতে দরজা ঠেলে ঢুকলো একটা শ্যিলুয়েট-
মাঝারি উচ্চতার সাধারণ গঠনের অবয়বটি সোজা কাউন্টারে গিয়ে টেকো ম্যানেজারকে জিজ্ঞেস
করলো-‘ শুণ্ডি, ইন্দ্রমল্ল সিংহ এসেছে?’
‘গোপাল, এদিকে’ চাপা অথচ তীক্ষ্ণ গলায় ডাক
দিলেন প্রৌঢ় – সোল্লাসে খড়্গ হাঁকলো-‘আর একটা ছশো’। ধীর ও মাপা পদক্ষেপে চতুর্থ
চেয়ারটায় গিয়ে বসলো গোপাল রুইদাস। তারপর গুটখার ছোপ লাগা দাঁত বের করে অল্প হেসে
বললো- ‘এখানে নয়, ম্যানেজার শুণ্ডিকে বলে দিয়েছি-কেবিন খুলে দিচ্ছে- ওখানেই সবকথা
হবে।’ কালু অবাক হয়ে লোকটাকে দেখছিল – আপাদমস্তক ভিজে জামাকাপড়ে একজন সাধারণ
ছাপোষা মানুষ বলেই মনে হচ্ছে তাকে- শুধু ঘাড়ের কাছে লম্বা ক্ষতটা জল আর আলোয় চকচক
করে উঠছে।
*********
পাঠক, এই চারজনের গল্প শুনতে গেলে আপনাকে খানিক ইতিহাসের
ফ্যাবড়াচোস্তা চিবুতে হবে, নইলে ঠিক এ মদের খেই পাবেন না। এসব কাহিনীর শুরু অনেক
আগে। দেশ তখন সবে স্বাধীন হয়েছে। বিহার-মালদা-বাংলাদেশ বর্ডার স্মাগলিং বুটলেগিং
ড্রাগের এক মৌরসীপাট্টায় পরিণত হচ্ছে। মদ, হেরোইন, মেয়েছেলে, গরু- মূলত এগুলোর
কারবার করে এই অঞ্চলে কিছু লোক ফুলেফেঁপে উঠতে লাগলো। এদের মধ্যে সবাইকে ঠাণ্ডা
করে পুরো কার্টেলের মাথায় বসেছিল শশাঙ্ক রায়। পুরনো লোকেরা বলে শশাঙ্কের দাপটে
এমপি-ডিএসপি এক গেলাসে মদ খেতো। শশাঙ্কের মূল বিরোধী ছিল খড়্গবাহাদুরের ঠাকুরদার
গ্রুপ আর খোট্টা বর্ধন সিং। খড়্গের ঠাকুরদাকে দিনেদুপুরে মালদা পুরনো বাজারে
কচুকাটা করে শশাঙ্ক, বর্ধনের বোনের কেবল শাড়িটুকু পাওয়া গেছিল। পুরনো মাফিয়া বৃদ্ধ
ভানু গুপ্ত পাগলা নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে একদিন ভ্যানিশ হয়ে যায়। আর তারপর শশাঙ্কের
কথায় গৌড়বঙ্গ উঠবোস করতে লাগলো। এমেলে-ও হয়ে গেল সে বিপুল ভোটে জিতে। আর
স্মাগলারদের মধ্যে বিরল প্রতিভা হিসেবে ষাট পেরিয়ে হার্ট অ্যাটাকে মরলো শশাঙ্ক
রায়। শশাঙ্কর ছেলে মানব কিন্তু বাপের দাপট পায় নি- ফলে কার্টেলের মাথায় বসেই সে
ক্রমাগত হোঁচট খেতে লাগলো। আর একদা শশাঙ্কের বামহাত নিপুণ সইকিয়া একদিন রাতে
মানবের সিঙ্গল মল্টের গেলাসে মিশিয়ে দিল মিঠা অ্যাকোনাইটের গুঁড়ো। কিন্তু পাপ
বাপকেও ছাড়ে না, মানবের শ্রাদ্ধ মেটার আগেই মহানন্দা ব্রিজের তলায় নিপুণের বডি
পাওয়া গেল। এরপরেই শুরু হল আসল খেলা। রোজ রাতে রাজা বদলে যেতে থাকলো। ইংলিশবাজার
থেকে হামিদপুর অব্দি এলাকার লোকজনের বোমের আওয়াজ না শুনলে রাতের ভাত হজম হত না।
কচি ছেলেরা মেশিন ধরতে শিখেই নিজেকে নটবর ভাবতে লাগলো আর সেক্সসংখ্যা দু অঙ্কে
পৌঁছনোর আগেই বেহেস্তের হূরী ধরতে পাড়ি দিতে লাগলো।
এসবের মধ্যে সবচে খতরনাক ফাঁদ ছিল শ্রীদেবীর। বছর
পঁয়ত্রিশের এই লাস্যময়ী নেপালী রমণী আসলে সম্পর্কে খড়্গের সৎমা। খড়্গের বাপ ললিত
বাহাদুর কাঠমাণ্ডুর চরসগলি থেকে একে তুলে এনে বিয়ে করে। বিয়ের ছমাসের মধ্যে
হাট্টাকাট্টা ললিত বাহাদুর দুদিনের জ্বরে মরে যায়। ব্যবসা ধরে ললিতের ভাই গোবিন্দ।
আর তারপর থেকে গরুর বাঁটে লেগে থাকা দাঁড়াশ সাপের মত কার্টেলের রক্ত চুষে ফুলছে
শ্রীদেবী। এর চোখের ইশারায় গোবিন্দবাহাদুর থেকে উঠতি মস্তান পারভেজ অব্দি গোলাম
হয়ে যাচ্ছে- পায়ের তলায় উজাড় করছে কার্টেলের পয়সা- নিজেদের মধ্যে হরদম খুনোখুনি
করছে- আর শ্রীদেবীর নামে কলকাতায় তিন তিনটে আপক্লাস এসকর্ট হাউস রমরম করে চলছে।
মালদার মেয়েছেলেরা আড়ালে এই শ্রীদেবীকে জোয়ানখাকী নাগিন বলে ডাকে। কার্টেলের উপর
ভরসা করে থাকা প্রান্তিক মাফিয়াদের তাই আজ ভয়ানক দুরবস্থা। খড়্গের কাকা আর তার
মক্ষিরানী শ্রীদেবী মিলে তাদের সব লাভের গুড় চেটে সাফ করছে – আর লোকাল ছ্যামড়ারা
আস্কারায় মাথায় উঠে তোলাবাজির এমন বাড়াবাড়ি করছে যে স্থানীয় ব্যবসাদারদের বিজনেস
করা দুস্তর হয়ে দাঁড়িয়েছে। শশাঙ্কের সময় বছরে দুবার তোলা দিলে যে ঝামেলা মিটতো এখন
হপ্তায় হপ্তায় নতুন নতুন লোককে তোলা দিতে গিয়ে নাভিশ্বাস উঠছে। তাই পরিবার থেকে
বেরিয়ে এসে নতুন বাজারে কম্পিউটারের দোকান দেওয়া খড়্গবাহাদুর থেকে বিষ্ণুপুরের
কাঠমাফিয়া ইন্দ্রমল্ল সিংহ, হংসগিরি লেনের বেশ্যা টিনা থেকে মহদীপুরের বর্ডারমাঝি
তোবারক – সবার কপালে চিন্তার ভাঁজ – সবাই ধান্দা বাঁচাতে পেট বাঁচাতে একটা কিছু
চাইছে।
***********
এইখানে সীনে ঢোকে গোপাল রুইদাস। বাড়ি ডালখোলা। জাতে মুচি। বাপ
নামকরা হিটম্যান বোপট রুইদাস। লোকে বলে জঙ্গল শবরের সাথে গোপালের মায়ের আশনাই ছিল।
জঙ্গলই পরে নাকী বোপটকে ঝেড়ে দেয়। বাড়ির লাগোয়া জঙ্গলচণ্ডীর মন্দিরে সারাদিন পরে
থাকতো গোপাল। বোপটের হাপিশ হবার পর সে হঠাৎ হিলিতে চলে যায়। একেবারেই সাধারণ
চেহারার ছেলেটির একমাত্র গুণ ছিল দুর্জয় সাহস। হিলিতে মাল এসপার-ওসপার করতে গিতে
বিডিআর-এর হাতে ধরা পড়ে সে- হাত বাঁধা অবস্থাতেই বিডিআর জওয়ানটিকে লাথি মেরে চলন্ত
ট্রেনের সামনে ফেলে দিয়ে সে পালিয়ে আসে। ইসলামপুরের মুন্না বেগ ঘাড়ে ক্ষুর মেরেও
গোপালকে কায়দা করতে পারে নি- হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়া মাত্র সে অ্যাম্বুলেন্স
নিয়ে সোজা মুন্নার বাড়ি যায় ও তার সিনায় পাঁচটা বুলেট ঠোকে। ফলে বছর পাঁচেকের মধ্যেই
গোটা দিনাজপুর পূর্ণিয়ার বাদশা হয়ে ওঠে গোপাল রুইদাস। গোবিন্দ গোপালকে খুন করার
অনেক চেষ্টা করেছে, কিন্তু সুবিধে করতে পারে নি। মালদায় ঢুকলেই নির্ঘাৎ মৃত্যু
জেনেও আজ গোপাল চলে এল ইন্দ্রমল্লের সাথে দেখা করবে বলে – এই প্রচণ্ড বৃষ্টিতে
একশো কুড়িতে বাইক চালিয়ে- একা।
**********
জয়স্কন্ধ বারের ম্যানেজার শুণ্ডি ভ্যাপসা ঘরটা খুলে দিয়ে
দুটো বোতল, চারটে গেলাস আর লাল রঙের চিলি চিকেন নামিয়ে দিয়ে গেল। গম্ভীরভাবে বলে
গেল-‘নিকলনেকা ওয়াক্ত মিসকল দিজিয়েগা’। সে বেরোতেই কালু তাড়াতাড়ি দরজাটা বন্ধ করে
দিয়ে বললো- ‘গোপালদা, কাঁকিনাড়া থেকে চাঁদ আসতে পারে নি- তমলুকে বীরেনের ডেরায়
টিকটিকি বাসা করেছে- আমরাই কেবল বল্লভপুর-রাঙ্গামাটির জঙ্গল ধরে লুকিয়ে আসতে
পেরেছি। কিছু একটা কর গোপালদা।’ গোপাল জিজ্ঞাসু চোখে তাকিয়ে ধীরে ধীরে বাংলার
গেলাসে চুমুক দিতে লাগলো। মুখ খুললেন ইন্দ্রমল্ল- ‘তুমি তো জানো গোপাল,
গোবিন্দবাহাদুর আর শ্রীদেবীর উৎপাতে ব্যবসা করা দুষ্কর হয়ে গেছে, লোকাল মস্তানদেরও
বাড়াবাড়ি চরমে উঠেছে- আমার এমন ক্ষমতা নেই যে মালদায় এসে এদের সাথে লড়ি- সাউথ
বেঙ্গলে চাঁদ বা বিহার শরীফে রাজুর একই অবস্থা- তোমার বয়স কম, সাহসও অনেক বেশি-
তাছাড়া গোবিন্দ আমাদের স্ট্র্যাটেজি জানে, তুমি অচেনা –তুমিই দয়া করে এ দায়িত্ত্ব
নাও- কার্টেলের গোপন মিটিঙএ সবাই তাই অনুরোধ করেছে।’ খড়্গ মাংসর গ্রেভি জিনসে
মুছতে মুছতে বলে উঠলো-‘লোকাল রিসোর্স নিয়ে ভেবো না গোপালদা- এই খানকীটাকে শেষ কর-
ফিনান্স রিসোর্স সব আমরা দেখে নিচ্ছি।’ গেলাসটা রেখে হাফখালি বোতলটা তুলে নিল
গোপাল- ঢকঢক করে সিক্সটিটা গলায় ঢেলে পকেট থেকে রজনীগন্ধার প্যাকেট বের করলো- তাতে
সাবধানে মেশালো তুলসী ট্রিপল জিরো- তারপর পুরোটা মুখে ফেলে হাঁটতে হাঁটতে গিয়ে
জানলাটার ধারে চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলো। সারা ঘরে তখন হিরন্ময় নীরবতা।
কতক্ষণ কেটে
গেছে কে জানে। ইন্দ্রমল্লের দুখানা লম্বা গোল্ডফ্লেক শেষ হয়ে গেছে। তার সামনে
সিগ্রেট খেতে না পেরে কালু আর খড়্গ উশখুশ করছে। হঠাৎ পিক ফেলে গোপাল বলে
উঠলো-‘নিষেকবজ্র চেনো কালু? নিষেকবজ্রের লতা?’- তারপর তিনজোড়া অবাক চোখের দিকে
তাকিয়ে নিজেই উত্তর দিল-‘বশীকরণের সবচে বড় অস্ত্র- মা চণ্ডীর কৃপায় আমি জেনেছি।’
আবার সব চুপচাপ। মিনিট পাঁচেক পর নৈশব্দ ভেঙ্গে সে ঘুরে দাঁড়িয়ে বললো-
‘বিষ্ণুপুরের মালিক, একটা সলিড দেখে হাতির দাঁত জোগাড় করতে পারবেন? আপনার তো
মাইশোর বা কামরূপে ভালোই চেনাশোনা- কিনতে হবে না, ভাড়ায় নিলেই হবে।’ ইন্দ্রমল্ল
সম্মতিসূচক মাথা নাড়লেন। ‘তাহলে আর কী, হয়ে যাবে। কিন্তু আমার ব্যাপারটা...’-‘কোন
ব্যাপার নেই গোপাল, সব ঠিক আছে- তুমিই হবে কার্টেলের সর্বেসর্বা- নতুন শশাঙ্ক
রায়।’ নিশ্বাস ফেলে পিঠটা এলিয়ে দিলেন প্রৌঢ় ইন্দ্রমল্ল সিংহ।
*********
ভাদ্রমাসের
অমাবস্যা। গোবিন্দবাহাদুরের ড্রইংরুমে একটা বিশাল হাতির দাঁত রাখা। দরাদরিতে
ব্যস্ত ইন্দ্রমল্ল ও গোবিন্দ। গ্লাসটপ টেবিলে রয়্যাল স্যালুটের বোতল ও দুটি গেলাস।
ইন্দ্রমল্লের ঠোঁটে সিগারেট। চোখ উত্তরের জানলার দিকে। গোবিন্দ ঈষৎ টলটলায়মান। ঘরে
দ্বিতীয় মানুষ নেই। দরকারও নেই। কারণ ঘরে ঢোকার আগে দেহরক্ষী তল্লাশি করে নিয়ে
নিশ্চিত হয়েছে ইন্দ্রমল্ল নিরস্ত্র। হঠাৎ উত্তরের সাততলা ফ্ল্যাটের ছ’তলায় একটা
তীব্র নীল আল জ্বলে উঠলো। চকিতে শ্বাপদের মত চোখে আলো খেলে গেল ইন্দ্রমল্লের-
সপাটে উঠে দাঁড়িয়ে ঠিক দুটি বিদ্যুতগতির আঘাত হানলেন গোবিন্দের গলার মাঝখানে আর
বাম নিপলের তলায়। বিস্ফারিত চোখে মুখটি হাঁ করে কী একটা বলতে গিয়ে এলিয়ে গেল
গোবিন্দর স্ফীত মেদবহুল শরীর। ক্যারোটিডে হাত দিয়ে ইন্দ্রমল্ল দেখলেন স্পন্দন নেই।
মৃদু হাসলেন মল্লশিরোমণি- তিব্বতের শিক্ষা এখনো আয়ত্তে আছে তাঁর। তারপর ধীর
পদক্ষেপে দরজাটি ভিতর থেকে আটকে গেলাস হাতে নিয়ে বসলেন। ওদিকে শহরের পাড়ায় পাড়ায় কালু আর খড়্গের লোকজন নেমে পড়েছে সোর্ড আর
বন্দুক নিয়ে। হংসগিরির বিছানায় গড়াগড়ি যাচ্ছে গলাকাটা রোমিওদের লাশ। কালু তার
চাইনীজ অ্যাসাল্ট রাইফেল নিয়ে ঢুকে পড়ছে গোবিন্দের প্রাসাদে।
**********
জন্মেঞ্জয় ভবন। ছ তলা। প্রশস্ত কিংসাইজ বেডে বসে রজনীগন্ধায়
তুলসী মেশাচ্ছে গোপাল। গলার লকেটটি বাদ দিয়ে তার শরীরে একফোঁটা সুতোও নেই। সামনের
মেঝেতে উপুড় হয়ে পড়ে আছে এক পীনোন্নত পয়োধর পৃথুজঘনা রমণী- তার পরনে কেবলমাত্র নীল
রঙের ফ্রিল দেওয়া প্যান্টি। কষের কাছে সামান্য রক্ত। পাশে কিছু পাতা লতা আর একটি
গেলাসে সামান্য সবুজ তরল। কিছু পূজার উপচার বমি মাখামাখি হয়ে উল্টেপাল্টে পড়ে আছে।
জর্দাসুপুরি মুখে ফেলে গোপাল উঠে দাঁড়ালো। লকেটের জঙ্গলচণ্ডীর ছবিটা কপালে ঠেকালো
একবার। তারপর লঘুপায়ে জানলা অব্দি হেঁটে গিয়ে নীল আলোটা বন্ধ করে দিল। ভোর হয়ে
আসছে। গুলিগোলার শব্দও অনেকটা স্তিমিত। দূরে লক্ষ্মীপুরের মোড় থেকে মাইকে ভেসে
আসছে-
মাৎস্যন্যায়মপোহিতুং প্রকৃতিভির্লক্ষ্ম্যাঃ করং গ্রাহিতঃ
শ্রীগোপাল ইতি ক্ষিতিশ শিরসাং চূড়ামণিস্তৎসূতঃ ।।
No comments:
Post a Comment