উষ্ণতম এক দিনের রজনীক্ষণে
আপনার ক্লান্তসিক্ত দেহ যখন এলিয়ে পড়বে নরম বিছানায়, তন্দ্রা আর নিদ্রার যৌথ
ষড়যন্ত্রের শিকার হওয়ার প্রাক মুহূর্তে হঠাৎ যদি মাতাল হাওয়া বয়ে আনে ঝড়ের সংকেত,
বিছানার পাশে খোলা জানলা দিয়ে যদি এক সর্বত্যাগী স্নিগ্ধ হাওয়ার দাপট এসে ভুলিয়ে
দেয়, আপনার সমস্তদিনের ক্লান্তি; তবে সেই আবহে কোন গানের সুর দোলা দেবে আপনার
অন্ধকারাচ্ছন্ন চিত্তে ?
দিনের শেষে নিজের দেশে অন্ধকার ঘরে খোলা জানলা দিয়ে এসে পড়া মায়াবী মোহাচ্ছন্ন
মরীচিকায় কি বলবে আপনার মন আপনাকে? এসব হিজিবিজি চিন্তার মাঝে হঠাৎ
কিছুটা সংবিত ফিরতে আপনি হাতে তুলে নেবেন পাশে রাখা মোবাইলটা। স্ক্রিনটা অন করতেই
দেখবেন আপনি যার ছবি প্রতিনিয়ত নিজের হৃদয়পটে এঁকে চলেছেন সেই প্রেয়সী ম্যাসেজ
করেছে আপনাকে, সেও উপভোগ করছে এই আবেগী আবহাওয়া, ম্যাসেজে জিজ্ঞেস করছে আপনাকে—
“কেমন লাগছে এই Weather ?”, সেই মুহূর্তেই যদি ঝোড়ো – হাওয়ার পিছু পিছু কিছু
নাতিক্ষুদ্র জলবিন্দু ওই জানলা দিয়ে উড়ে এসে আপনার সারামুখে ছড়িয়ে গিয়ে আপনাকে
চাটুল্যের হাতছানি দেয় তবে, প্রেয়সীর ম্যাসেজ থেকে জলের ছিটে, পুরোটা কি আপনার মনে
এক স্বপ্নময় আবেগের সৃষ্টি করবেনা?
এ ভরা আঁধারে স্নিগ্ধ বাতাসের সুড়সুড়িতে অতি বড় বেরসিকের চিত্তউ রসস্ফিথ হয়ে উঠবে।
ছাপোষা বাঙালিও নিজেকে মনে করবে Romantic। কিছুটা ডিজিটাল বার্তালাপ চলবে আপনার
সাথে আপনার নিলাঞ্জনার। কিছুটা আবেগের বশেই হয়তো সে পরিবেশ প্রাসঙ্গিক কোন গানের
লাইন/ স্বরচিত কবিতা পাঠাবে আপনাকে।–“বৃষ্টি বড় সুক্ষ যে বৃষ্টি কোন
সুখ খোঁজে” ।
এরকম Romantic পরিবেশে কাব্যিক ভাবেই আপনি উত্তর দিতে
চাইবেন আপনার তিলোত্তমাকে। কিন্তু নিদ্রার ষড়যন্ত্র আর ক্লান্তির প্রতিঘাতে হয়তো
ধরা দেবেনা কবিতা; তবুও, তবুও চটুল বার্তার প্রত্ত্যুতর দেওয়ার উগ্র মনোভাবের মেঘে
ঢাকা পড়বে আপনার চিন্তা ভাবনা। আর তাই, কবিতা না এলেও ছন্দে ছন্দ মিলিয়ে মোটামুটি
দাঁড় করাবেন কিছু একটা—
এভাবেই কিছুক্ষন হৃদয় আলাপ চলবে আপনার সাথে আপনার মানসীর। তারপর একটা সময় নিদ্রা
সফল হবে তার ষড়যন্ত্রে। হাতটা শিথিল হয়ে আসবে আপনার। অবিরত ধেয়ে আসা নিদ্রাবাণ
থেকে কোনমতে নিজেকে সুক্ষ সময়ের জন্য আড়াল করে কোনমতে লিখবেন “শুভরাত্রি”। তারপর
নামিয়ে রাখবেন হাতের মোবাইলটা। এখন সময় নিদ্রার কাছে সমর্পণ করার। এই পরাজয় যেন
শান্তির স্বস্তির। আবগি আবহাওয়া সৃষ্টির জন্য দায়ী মাতাল হাওয়াও থেমে যাবে একটা
সময় ক্লান্ত হয়ে। সঠিক মুহূর্তের সন্ধিক্ষণে নিশির গহ্বর থেকে বেড়িয়ে আসবে রুদ্র।
আবার শুরু হবে উষ্ণতম দিনের এক ক্লান্তসিক্ত জীবন...
No comments:
Post a Comment