এবার ব্যাপারটা বিরক্তিকর
জায়গায় চলে যাচ্ছে।প্রতি সপ্তাহে পেট্রল পাম্পে তেল ভরাতে গিয়ে যখন দেখি পং পং করে
সত্তর-বাহাত্তর খেলতে খেলতে আশির ঘর টপকে যাচ্ছে,নিজেকে নিজে গাল পারি এরকম লুটেরা রাষ্ট্রে জন্মানোর
জন্য।তারপর বুঝি এই দিদিচুর-মোদীচুর লাড্ডুর সংসারে সব ই মায়া প্রপঞ্চময় তাই সাইকেল
চালানোর উপযোগীতা মনে মনে আওড়াতে আওড়াতে নিজের পেট্রলের খরচ বাবদ বাঁচানো পয়সা এবং
সাইক্লিং বাবদ অর্জিত সুস্বাস্থ্য কল্পনা করে দুই কাঁধে ফুঁ দিতে দিতে ফিরে
আসি।সাইকেল আর কেনা হয়ে ওঠেনা।কারণ সাইকেলে ইএমাই সিস্টেম চালু আছে বলে মনে
হয়না।আর থোক টাকা তো সংসারখরচের সাথে জুড়ে থাকা ডিজেলের দাম মেটাতে মেটাতেই চলে
যায়।এত ভজঘট চিন্তা করতে করতেই ক্লান্তি চলে আসে।আর বিশ্বাস বাবু শক্ত চাহনি দিয়ে
বলেন এবার বুঝলি কেন লোকে স্ক্যাম করে? তাইতো !! এই যে দুদিন
পরপর এতো স্ক্যাম এতো দুনম্বরী এসব তো রাষ্ট্রের ই অনুপ্রেরণা।দৈনন্দিন এই বিপুল
চিন্তা করতে করতে জামাকাপড় খুলে বাথটাবে আর্কিমিডিস হয়ে বসে থাকার চেয়ে একটা
স্ক্যাম করে ট্যাকাটুকা কামিয়ে এসব চিন্তা থেকে মুক্তিলাভ করে ফেলাটাই তো
বুদ্ধিমানের কাজ।কিন্তু চোদ্দগুষ্টিতে তো কেউ জেল খাটেনি তাই আমি আলটপকা স্ক্যামে
ফেঁসে ভেতরে ঢুকে গেলে আমাকে নিয়ে প্রিজন ব্রেক সিজন তো তৈরী হবেই না বরং
চোদ্দগুষ্টি দেবতা আমার তুষ্টি পূজা করে ছেড়ে দেবে।ঘাড় বেঁকিয়ে চোখ মটকে কোন এক
প্রয়াত নন্দীবাবু বলে বসবেন, সে তো ব্যাটা লাল লাড্ডুর আমলেও
পেট্রল ডিজেলের দাম বাড়তো লাল লাড্ডুরা এট্টু হাল্লাগুল্লা করে বাসের ভাড়াটা পংপং
করে বাড়িয়ে দিতো,তাই বলে কি আমরা স্ক্যাম করতে গেছি?নন্দীবংশের মান ইজ্জত তুই ব্যাটা রনজিতে এর হাতে তুলে দিলি? হাহাহাহা রনজিতে এর অট্টহাসিতে স্ক্যামের প্ল্যান চৌপাট।
না না এসব নিয়ে বিরক্ত
নই। পাপ্পুচুর-লাল লাড্ডু থেকে মোদীচুর-দিদিচুর লাড্ডু সবাই তো বংশপরম্পরায় কাঁঠাল
আমজনতার ঘাড়েই ভেঙে চলেছে তাই কাঁঠালের রস আর চ্যাটচ্যাটে লাগেনা।বিরক্তির কারণ
হলো গত সপ্তাহে হসপিটালে সিরিয়াস কন্ডিশনে ভর্তি থাকা এক দিদিভাইকে দেখতে যাবো বলে
হাজরা মোড়ে নেমে দেখলাম প্রতিবাদে ছয়লাপ লোকজনের ভিড়ে অটোপরিসেবা বিঘ্নিত।দিদিচুর
লাড্ডু বাহিনীর দাপটে টেকা দায়।আন্দোলনের মূল দাবী পেট্রোপন্যের মূল্যবৃদ্ধির
প্রতিবাদ।প্রতিবাদের বেগ বাড়ানোর তাগিদেই হয়তো লাড্ডু কোম্পানীর ম্যানেজারেরা
পতাকা মুড়ে বাইকের কান মুলে বিকট শব্দ তৈরী করে সব ধোঁয়া ধোঁয়া ধোঁয়া করে
ফেলছেন।বেশ একটা লড়কে লেঙ্গে পেট্রো হক টাইপ ব্যাপার।মানে সত্যি?
না মানে আমাদের কপালে কি
আবোদা ট্যাটু করে লেখা আছে? এতো ধোঁয়া না
উড়িয়ে রাজ্যসরকারের ট্যাক্স বাবদ যে বাইশটাকা আমাদের কান মুলে নিয়ে নেওয়া হচ্ছে
সেটা ছেড়ে দিলেই তো ঝামেলা মিটে যেত।উহু তাহলে তো যতীন দাসের মতো বঙ্গবীর মার্কা
ফিল নিয়ে যতীন বাবুর স্ট্যাচুর গোড়ায় গুটখার রস ফেলা হবে না।এর আগে কিছুদিন বাওয়াল
বাওয়াল খেলা হলো জিএসটি নিয়ে।তা জিএসটি বিলে এসজিএসটি বলে যে এমাউন্ট টা লেখা থাকে
সেটা রাজ্যসরকারের কোষাগারে জমা পড়ে না তো?জমা যখন পড়ছেই আর
সেটা যখন পরমানন্দে গিলেও ফেলছো তাহলে বাওয়াল বাওয়াল খেলার দরকার কি ছিলো? আর পেট্রোলের মূল্যবৃদ্ধিতে আগে বাইশ টাকা ছেড়ে দিয়ে রাস্তায় নেমে ধোঁয়া
ওড়ালে ভালো হতো না?
এই অব্দি ও বিরক্তিরেখা
সহ্যসীমার নিচে ছিলো।কাল থেকে দেখি অনলাইনে মোদীচুর লাড্ডু কোম্পানীর ম্যানেজাররা
বিভিন্ন রকম স্ট্যাট ছড়াচ্ছে।যেখানে নরওয়ে, আইসল্যান্ড এমনকি হয়তো সাউথ পোল বা নর্থ পোলের ও পেট্রোলের দাম দেখানো
আছে।আবার কোন কোন স্ট্যাটে পাপ্পুচুর-লাল লাড্ডু কোম্পানীর সময়ে পেট্রোলের কতটা
খারাপ দাম ছিলো সেসব দেখানো হচ্ছে।তবে এই মোদীচুর লাড্ডু কোম্পানীর ম্যানেজারদের
আফটার সেলস সার্ভিস খুব ই খারাপ।প্রথমতঃ ইটচাপা ফ্যাকাশে ঘাসের কোয়ালিটির পোস্ট
বানায় এরা দ্বিতীয়তঃ এদের কাছে ক্ল্যারিফিকেশন চাইলে ক্লায়েন্ট স্যাটিশফ্যাকশান কে
মধ্যমা দেখিয়ে এরা অফলাইন হয়ে যায়।উত্তর আসেনা।গরুর পেটের অপাচ্য ঘাসের মতো এদের
পোস্ট গুলো পড়ে থাকে।এতো পরিশ্রম না করে এরাও কিন্তু মোদীচুর লাড্ডু কোম্পানীর কাছে
দরবার করে পেট্রল ডিজেলকে জিএসটির আওতায় আনার কথা বলতে পারে।
মেরুদন্ড বিকিয়ে দিলে
মস্তিষ্ক যে তারসাথে ফ্রিতে দিতে হয় এটা এদের দেখলেই বোঝা যায়।এদের এই আন্দোলন
আন্দোলন বা স্ট্যাট স্ট্যাট খেলার সাথে সাথে আমাদের ও অবিলম্বে নোটা নোটা খেলা
শুরু করা উচিত।কি বললেন? বারবার ভোট
করালে আমাদের ট্যাক্সের টাকা বরবাদ হবে... তা কোনসা আপনার আমার ট্যাক্সের টাকা
আমাদের পেছনে খরচা হয় সব তো চুর লাড্ডু কোম্পানীর ম্যানেজারেরা সুইস ব্যাঙ্কে
জমায়।তারচে আসুন নিজেদের ট্যাক্সের টাকা নিজেরাই ওড়াই।এক বাটি তেল মাখি আর নোটা
নোটা খেলি।সারা বছর হোক ভোট উৎসব।
No comments:
Post a Comment