অনুভূতি নাকি ছোট হতে,হতে
মেসেজ আর টাইপের ফাঁকে
পকেটেতে রাখা চলভাষেতে বন্দি,
আন.... হা , হা, হা।
কিরে কি খবর?☺
কিরে কি খবর?😉
কিরে কি খবর?😡
কিরে কি খবর?😆
কিরে কি খবর?😂
বুঝলেন না? বুঝলেন না তো?
হুম হুম দাদা এই হলো ইমোজির জোর। ওপরে দেখুন একই লেখা কিন্তু মানে আলাদা, নেপথ্যে ? ওই যে, নেড়া মাথার মুখগুলো। হেব্বি ক্ষমতা মাল গুলোর, নইলে আপনার স্ক্রিনের ওপারে থাকা মানুষ গুলোর সব অনুভূতি টুকু কাছে এনে দিতে পারে??
হমম অনুভূতি। একবিংশ শতাব্দীর গোড়ায় মোবাইল সব দিয়েছিল শুধু ওই অনুভূতি নামক অ্যাবসট্রাক্ট নাউন টি বাদে। মানে ধরুন আপনি রেগে গিয়ে কাউকে মেসেজ করছেন কিন্তু সে অপনার রাগের মাপ টা ঠিক পাচ্ছে না, দিন না একটা লাল মুখো নেড়া মাথা জুড়ে, বা শিং দেওয়া অনিডা টিভির দৈত্য টা কে, ব্যাস কেল্লা ফতে। অপর প্রান্ত থেকে নিদেন পক্ষে একটা উত্তর আসবেই।
👿
বা ধরুন প্রেমিকার মন খারাপ কিছুতেই কিছু হচ্ছে না, স্রেফ একটা লাভ সাইন, সিয়াচেন গলে যাবে দাদা তো কোথায় আপনার প্রেমিকার মন।
❤️
বা, ধরুন এই ভরা বর্ষায় আপনি পুরো যক্ষ, প্রিয়া বিরহে পাগল। মেঘ কে দূত করতে হবে না, জাস্ট টুং শব্দে একটা চুমু ছুঁড়ে দিন। হ্যাঁ দাদা চুমু ওই মবিলিন লিপস্টিকে মাখা একটা লাভ সাইন চুমু। প্রেমিকা কুপকাত।
😘
বা ধরুন পাশের বাড়ির বৌদি কে একচোট নিখাদ ঝাড়ি মারবেন, রিকোয়েস্ট করেছেন ফেসবুক বন্ধুত্বের, একদিন কোনো এক মাহেন্দ্রক্ষণে বৌদিও আপনাকে অনুমুতি দিয়েছেন বন্ধুত্ত্ব করার, তো আপনি মেসেজে কি বলবেন? দাদা কি ভাববে? এসব ভাবতে ভাবতে টুকুস করে দিলেন একটা আদিম প্রবৃত্তি যুক্ত এক চোখ বন্ধ নেড়া মাথার মুখ ছুঁড়ে, কিউপিডের তীরের মত বৌদির বুক ফালাফালা দিল ব্যাস পরকীয়া শুরু।
😉
সৌজন্যে- "ইমোজি!"
কি? কি এই ইমোজি?
আসলে মানুষ শুধু ঠোঁটে কথা কোনোদিনই বলতে পারে না। হাত , পা , মাথা , চোখ সব জুড়ে কথা বলে। কিন্তু সে সব তো আর ওয়্যারলেস মাধ্যমে লিখে দেখানো যাবে না।
অগত্যা তেল থেকে শুরু করে 5g পর্যন্ত্য সবের জন্য যার কাছে আমরা ঋণী তাদের দেশের লোক আবার এগিয়ে এলেন, হ্যাঁ দাদা, জাপান। জাপানের নাগরিক শিগেতাকা কুরিতা নামের এক ব্যক্তিই এগুলোর আবিষ্কারক। কুরিতা জাপানের একটি যোগাযোগ মাধ্যমের প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। তার মাথায় ১৯৯৯ সালে প্রথম এ ধারণা আসে। তারপর নিজেই এটা বাস্তবায়ন করেন, তৈরি করেন নেড়া মাথার কিছু লোক জন যারা আজ গোটা ফেসবুক থেকে হোয়াটস অ্যাপ জুড়ে আমার আপনার অনুভূতির জোগান দেয়, সারাদিন ঘোরাফেরা করে, সেই ইমোজি।
বর্তমানে শুধু ফেসবুকেই প্রতিদিন ৫ কোটি ইমোজি ব্যবহার হয়ে থাকে এবং ফেসবুক মেসেঞ্জারে ইমোজির ব্যবহার প্রতিদিন ৫০০ কোটি। আজ ১৭ জুলাই বিশ্ব ইমোজি দিবস। দিবসটি উদযাপন করতে ফেসবুকে কোন ইমোজি সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয়, তার একটি তালিকা প্রকাশ করেছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।
প্রকাশিত তালিকায় দেখা গেছে, বিশ্বজুড়ে ফেসবুকে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ইমোজি
হচ্ছে লোল (ফেস উইথ টিয়ার্স অব জয়) ইমোজি😂। মানে হেসে আপনি চোখের জলে নাকের জলে।
দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে হার্ট আইস ইমোজি😍। মানে গদগদ একটা ব্যাপার।
তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে কিসিং ইমোজি😘। ওই এখানেও 18+ সেন্স।
‘ইমোজি’ শব্দটির উৎপত্তি জাপানি শব্দ ‘ইমোডজি’ থেকে। এর অর্থ ‘স্মাইলি’ অর্থাৎ 'হাসিমুখ'।
তবে খিস্তি থেকে শুরু করে কিস্তি আজকাল সবেই ইমোজির জয়জয়কার।
যদিও টুইটার প্রথম ইমোজির ব্যবহার শুরু করে এবং অ্যাপেল কোম্পানি তাদের ফোনে ফার্স্ট ইন্সটল করে এই ইমোজি তবে এখন ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপ, হাইক, ইন্সটা সবেই ইমোজির একছত্র অধিকার। বিভিন্ন মানুষের বিভিন্ন ভাষার সাথে সাথে ইমজিও একটি ভাষা।
অক্সফোর্ড অভিধানের ২০১৩ সালে ইমোজি কে ইংরেজি শব্দ হিসেবে মান্যতা দেয়।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, সর্বাধিক ইমোজি ব্যবহার করেন ফরাসিরা,কোনো নির্দিষ্ট ইমোজি নয় বরং তারা হৃদয়-আকৃতির ইমোজি ব্যবহার অধিক উৎসাহী। তাতে হয়তো বোঝা যায়, ফরাসিরা হৃদয়দৌর্বল্যে বেশি ভুগে থাকেন। আর হবে নাই বা কেন জিদান ছাড়াও ফ্রান্স এর অনেকে কিছু আছে, একটা প্যারিস আছে।
এটাও দেখা গেছে যে, যে দেশগুলোতে ব্যক্তিস্বাধীনতাকে অধিক মর্যাদা দেওয়া , সেইগুলিতে হাসিবাচক ইমোজির ব্যবহার অধিক।
অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স এবং চেক রিপাবলিক এর বেশিরভাগ মানুষ হ্যাপি ইমোজি ব্যবহার করে।
আর যে দেশেতে বিভিন্ন গোষ্ঠী একসাথে বসবাস করে , সেখানে বিষণ্ণতা, ক্রোধ এবং নেতিবাচক ও আবেগ-বাচক ইমোজি অধিক ব্যবহৃত হয়।
দক্ষিণ আমেরিকার বেশির ভাগ দেশগুলোতে মানুষ দুঃখ, রাগ এবং নেগেটিভ অনুভূতির ইমোজি বেশি ব্যবহার করে।
তবে যাই হোক আধুনিক বাঙালী সমাজে ইমোজি খানিকটা ওই রান্নার মশলার মত, "চোখে জল আর মুখে হাসি"।
হম হম বাওয়া দেখলে হবে ওয়ার্ল্ড ইমোজি ডে বলে কথা।
😂😉😘😃😗🤓😁
No comments:
Post a Comment