স্বাধীনতা অর্থাৎ স্বতন্ত্র্যতা, যা একপ্রকার মুক্তি আবেগ বহন করে।সেইরকম একটা
আবেগ আর অপেক্ষার অবসান ঘটেছিল ১৯৪৭ সালে,মাসটা আগস্ট আর তারিখ টা ১৫;আমাদের
মাতৃভূমির স্বক্ষমতা লাভ।সেই পূর্বারম্ভের আবেগ আজ ৭০ বছর পরেও আমাদের মজ্জায়
প্রথিত আর হবে নাই কেন দেশ টা তো আমাদের প্রানের সম্পদ,নিজের।কিন্তু লড়াই টা
কিন্তু শুরু হয়েছিল অনেকদিন আগে।না কোনো আন্দোলন বা জাতীয় কংগ্রেস অধিবেশনে নয়,
বরং যেদিন কোনো শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানবিক মনে প্রথম মুক্তির ভাবনার উদ্রেক হয়েছিল,
সেদিন; ধীরে ধীরে সংযুক্ত হয়েছিল সাধারন মানুষ থেকে সৈণিকদল। রাজনৈতিক নেতৃত্ব
কংগ্রেসিদের হাতে থাকলেও প্রকৃত অভিমুখ গড়ে দিয়েছিল কিন্তু সাধারনের আত্মত্যাগ।
ক্ষুদিরাম থেকে রাসবিহারী বোস,সূর্য সেন থেকে চন্দ্রশেখর আজাদ কিংবা নেতাজি সুভাষ
চন্দ্র বসু, এদের প্রত্যেকের কাছেই তখন ব্যাক্তিস্বার্থ ক্ষুদ্র।গড়ে ওঠে বহুমুখী
আন্দোলন।২য় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্ত্তী সময় বিশ্বশান্তিচুক্তি এবং বিশ্বখ্যাত ব্রিটিশ
সাম্রাজ্যের অর্থনৈতিক সংকট, ভারতীয় মহাদেশে বাড়তে থাকা আন্দোলন এর চাপে মাথা নত
করে তারা।যদিও দায় ঝেড়ে ফেলার আগে ঘটায় রক্তপাত,বিভক্ত করে মূল শরীর, তৈরী ভারত
এবং পাকিস্তান।আজ এর কুপ্রভাব গোটা বিশ্ববাসীই জানেন।স্বাধীনতার পর আজ ভারতবর্ষর ৭০
বছর অতিক্রান্ত অসংখ্য ঘাত প্রতিঘাতকে সঙ্গী করে।প্রাদেশিকতা থেকে শুরু করে
রাজনৈতিক হানাহানি,ধর্মাদ্ধতা থেকে শুরু করে সন্ত্রাসবাদ এমনকি মুদ্রাস্ফীতি এর মত
গুরুতর অসুখ শরীরের প্রতি ভাঁজে। ১২২ কোটি মানুষের প্রতিদিনকার লড়াই দেখতে অভ্যস্ত
এ দেশ।আজও নারী অত্যাচার, ধর্ষনের মত ঘটনা,গরিবী, অশিক্ষা, বাল্যবিবাহের মত আঘাত
গুলি গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করেছে।আজও কোনো সন্তানের লাশ পড়ে লোকালয়ে কিংবা কোনো
অভুক্ত জনজাতির হাহাকার কানে বাজে বিশ্রী সুরে।সেইসাথে বেকার সমস্যা বাড়ছে
উত্তরোত্তর।কিন্তু যেদিন ভারতবর্ষের প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছিল তখন শুধু পতাকাই নয় মাথা উঁচু করে
বাঁচার অঙ্গীকার নিয়েছিল প্রত্যেক ভারতবাসী। মনে রাখা প্রয়োজন আমরা লড়াকু জাত আমরা
হার মানিনি,লড়েছি শয়তানসম প্রতিটি সমস্যার সাথে। ১৯০ বছরের বৃষবৃক্ষ কে যখন সমূলে
উপড়ে ফেলতে পেরেছি তখন আমরা হারি না,হার মানতে জানি না।এর বহু প্রমান ইতিহাস
দিয়েছে আর বর্তমানও দিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। আমাদের ঐতিহ্য আমাদের শক্তি, সংস্কৃতি
এবং প্রবল বুদ্ধিমত্তার কাছে মাথা নত করেছে বিশ্বশ্রেষ্ঠ সভ্যতাগুলি,আর করবেও।শুধু
প্রশাসন নয় এর সাথে দরকার নাগরিক শক্তির সম্মিলন কারন People's thinking is always
represent a nation. এর পাশাপাশি ভীষন ভাবেবে দরকার আমাদের তারুণ্য শক্তি
কে।শিক্ষিত ছাত্র-যুবরাই পারে সভ্যতার ঝান্ডা হাতে নিয়ে দৌড়তে।সে স্বদেশি আন্দোলন
হোক কিংবা ৬০ দশকের ছাত্র আন্দোলন( During the time of national emergency)বা
'চিপকো মুভমেন্ট', বরাবর ওরা ভাঙে স্থবিরতা আর সেই ভেঙে ফেলা অস্থিচূর্ণ থেকেই
স্বপ্ন দেয় নতুন উড়ান।তবে সংকীর্ণতাবোধ থেকে মুক্তির মূহুর্তেই নতুন রবিকিরণ উদিত
হবে,আমরা হয়ে উঠব 'প্রকৃত স্বাধীন'।আজ ৭১ তম স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে এটাই
হয়তো সবচাইতে প্রাসঙ্গিক।কবির বলা কথাটি হয়তো সত্যি হয় উঠবে একদিন " ভারত
আবার জগৎসভায় শ্রেষ্ঠ আসন লবে"। সেদিনেরটার অপেক্ষায় রইলাম।
ইতি,
এক সাধারণ ভারতবাসী
No comments:
Post a Comment