ব্লগ-টগ

প্রকাশ্যে আত্মপ্রকাশের ঘরোয়া সূত্র

Post Page Advertisement [Top]

To Place your advertisement here call - +917980316633/+918145704098



পৃথিবীতে এমন অনেক কিছু ঘটে যা আমাদের পরিচিত চিন্তাবুদ্ধির বাইরে।সেখানে যুক্তি কিংবা বিচারশক্তিও হার মানতে বাধ্য হয়।চলুন সেরকম ই একটা সত্যি কিন্তু রহস্যময় ঘটনা আপনাদের শোনাই।
সাল টা ১৯৪৫, ৫ ই ডিসেম্বর, রুটিন ফ্লাইট থাকার কারনে ফ্লোরিডা নেভাল এয়ার স্টেশন থেকে উড়ান দেয় ৫ টি বোমারু বিমান। সাথে ১৪ জন এয়ারম্যান।তারা এগোতে থাকে উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের দিকে।শেষ প্র্যাক্টিস বোাম্বিং করার ৪০ মিনিট পর (সময়টা দুপুর ৩ টে ৪০ মিনিট) কিছু অদ্ভুত ঘটছে বলে রেডিয়োতে,নেভাল বেসে ম্যাসেজ আসে "I don't know where we are,we must got lost after turn"....ফের
"we are entering white water,no green...no white" ।
বেস থেকে তৎক্ষনাৎ জানতে চাওয়া হল কম্পাস রিডিং।কিন্তু ক্যাপ্টেন জানান তাদের কোনো কম্পাস কাজ করছে না এবং তারা ক্রমশ পশ্চিমের দিকে যাচ্ছে।এরপর বেস থেকে বারংবার বারণ করা সত্ত্বেও তারা সেদিকেই যায় যা অদ্ভুতভাবে প্রশিক্ষিত মিলিটারি রুলের বাইরে এবং পরবর্তীতে তাদের সাথে আর যোগাযোগ করা যাইনি।খুব সাধারন ঘটনা মনে হচ্ছে?
  



তাহলে জানিয়ে রাখি এই ৫ টি বোমারু বিমান (together called as Flight 19) কে আজ পর্যন্ত কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি! শুধু ফ্লাইট ১৯ নয়, এর খোঁজ করতে পাঠানো আরও একটি বিমানও নিঁখোজ হয় একইভাবে।আর শুধু তাই নয় উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের পশ্চিম অংশে মায়ামি, বারমুডা আর উয়েরতোর পাশের প্রায় ১৩ লক্ষ বর্গকিমি ত্রিকোন জায়গাতে এক এক করে হারিয়েছে আজ পর্যন্ত ৮৭৯ টি বিমান এবং জাহাজ একইভাবে!
  ইতিহাস এ ঘটনাকে নাম দিয়েছে বারমুডা ট্রাইঅ্যাঙ্গেল রহস্য।



এ রহস্যময় ঘটনাগুলি জনসমক্ষে আসতে শুরু করে ১৯৫০ এর শেষের দিকে, The Miami Herald পত্রিকা এবং তার ২ বছর পর 'Fate' ম্যাগাজিন এরম ঘটনার কথা জানায়,সেখানে স্থান পায় ফ্লাইট ১৯ এর ঘটনাও।১৯৬৪ সালে 'Argosy' এ ঘটনা
  সম্পর্কে লেখে 'The deadly Barmuda Triangle' শিরোনামে। ঠিক এখান থেকেই শুরু হয় রহস্য,
শুরু হয় 'অস্বাভাবিক কিছুর অস্তিত্ব' সম্পর্কে জল্পনা।প্রথমে দেবতা,ধীরে ধীরে অস্বাভাবিক সেই শক্তি হয়ে ওঠে 'ভীনগ্রহের জীবের অস্তিত্ব'। এ রহস্য নিয়ে বার হয়ে যায় গোটাকয়েক বইও।
ভদ্রলোকের নাম ভিনসেন্ট গ্যাডিস, বই লিখলেন বারমুডা নিয়ে,নাম দিলেন 'Invisible Horizon'।এছাড়াও চার্লস বেরিজ এর 'The Barmuda Triangle', রিচার্ড উইনারের ' The Devil's Triangle' উল্লেখযোগ্য। জনমানসে তখন এ নিয়ে বিপুল আগ্রহ। তাই শুধু বই নয় একের পর এক তৈরী হতে লাগলো বিখ্যাত
  সব সিনেমাও।বিখ্যাত পরিচালক  Christian Mclntire তৈরী করেলেন কল্পবিজ্ঞান সিনেমা 'Lost Voyage'।  তৈরী হল 'Bermuda Tantackles'এর মত সিনেমাও যেখানে বিশাল এক সমুদ্রজীব যে নিউক্লিয়ার শক্তিধর,সেই নাকি এ রহস্যের কারন। হয়েছে একাধিক আমেরিকান টিভি সিরিজ। কিন্তু আমরা রহস্য ভালবাসলেও বিজ্ঞান তা বরাবরই খন্ডন করাবার চেষ্টা করেছে যুক্তি দিয়ে।



কিছু আমেরিকান জাহাজ এবং বিমান বারংবার নিঁখোজ হবার পর US Coast Guard এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল যে
  তারা এমন অনেক লাশ এবং জাহাজের ভাঙা টুকরো পেয়েছে যা ওইসব ঘটনার সাথে সাযুজ্যময় এবং প্রতিদিন যেপরিমান যান মহাসাগর ওপর দিয়ে যায় তার তুলনায় এসব ঘটনা খুব নগন্য বলে তারা দাবি করেন। অন্যান্য মহাসাগরের ক্ষেত্রেও একইরকম ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে।এক্ষেত্রে প্রশান্ত মহাসাগর এর ঘটা রহস্যময় ঘটনাগুলি পরিমান অনেক বেশী বলে দাবি করে বেশকিছু মার্কিনি পত্রিকাও।তবে আধুনিক গবেষণার ফলাফল হিসাবে এ রহস্যের সমাধান প্রসঙ্গ উঠে এসেছে বেশকিছু গবেষণালদ্ধ বিষয়ন।আবহাওয়াবিদ এবংবিজ্ঞানীদের মতে, 
১) কম্পাস বিক্ষিপ্ত হবার কারন কোন রহস্য নয় বরং সে অঞ্চলে ম্যাগনেটিজমের স্বাভাবিক ধর্মের অবলুপ্তি।
 
২)বারমুডা ট্রানঅ্যাঙ্গেল অঞ্চলে ভীষন পরিমান ট্রপিকাল ঝড়।
৩) গাল্ফ স্ট্রিম নামক ভয়ানক ঢেউ,যা গাল্ফ অব মেস্কিকো উৎপত্তি লাভ করে।
৪) বিশাল পরিমান মিথেন হাইড্রেটের উপস্থিতি (Publishcation of USGS)যা আবহাওয়া অদ্ভুত হয়ে ওঠার অন্যতম কারন বলে মানেন অনেকে।
৫) এছাড়া পাইলট বা ক্যাপ্টেন দের নিজেরদের ভুলও দায়ী হতে পারে।
সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য, কেউ কেউ দাবী করেন কিছু ঘটনা নাকি আদতে কোনোদিনই ঘটেনি।ব্যারি সিঙ্গার বলে একজন ব্যাক্তির দাবী এসবের বেশিরভাগ ঘটনাই নাকি ব্যবসায়িক প্রচার করার উদ্দেশ্যে তৈরী করা।
তবে তর্ক বির্তক, মতবাদ,মতভেদ নিয়েই কিন্তু আজও রহস্য ঘনীভূত। যতদিন না পর্য়ন্ত বিজ্ঞান এর যথাযথ সমাধান করতে পারে অন্তত ততদিন আমাদের কাছে শুধু বিস্ময় হয়ে থাকবে 'The Devil's Triangle'।


No comments:

Post a Comment

Bottom Ad [Post Page]

To Place your advertisement here call - +917980316633/+918145704098