আমার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।তার বাস আমার অন্তরে!মনে মনে তার স্বপ্ন লালন করে চলি কিন্তু তবুও তার না থাকা আমাকে নিয়ে যায় এক শূন্যতার দেশে।
“তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে,মনে রাখবা রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দেবো,এদেশের মানুষ কে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ্!’’ এই আহবান আমার পিতার এই আহবান তার সন্তান,তার ভাইদের প্রতি!
নির্মলেন্দু গুণের কবিতায় কবি বলেছেন-
গণসূর্যের মঞ্চ কাঁপিয়ে কবি শোনালেন তার অমর কবিতা খানি –“এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম;এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম!”
হ্যাঁ এই আমার কবি,বাংলার কবি।যে যত বার রুখে দাড়িয়েছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে তাকে আর জায়গা দেয়নি বাংলা।আমার পিতা এই দেশ স্বাধীন করবার জন্য স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন।আমার পিতা এদেশের অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছিলেন তাই এদেশ আমার পিতাকে কেড়ে নিয়েছে।
আজ ১৫ ই আগস্ট ১৯৭৫ সালের এই দিনে শেখ মুজিবকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল!সেনাবাহিনীর এক্তি দল শেখ মুজিবের বাসভবনে গিয়ে একটি অভ্যুত্থান সংঘটিত তাঁকে হত্যা করা হয়.১৯৭৫ সালে অপ্রশমিত রাজনৈতিক বিশৃংখলার কারনে একটি সাংবিধানিক সংশোধনী বলে ব্যহত বিরোধী ছাড়া শেখ মুজিব রাষ্ট্রুপতি পদে নিযুক্ত হন.১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সালের মধ্যে উদীয়মান বামপন্থী শক্তি শেখ মুজিবুর রহমান এর হত্যাকান্ডের পরিস্থিত্রি সৃষ্টির জন্য অনেক টা দায়ী। বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য আওয়ামীলিহের ছাত্র সংগঠন,বাংলাদেশ ছাত্রলীগে থেকে বিভক্ত হয়ে একটি অংশ নিয়ে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল গঠিত হয় কর্নেল আবু তাহের এবং হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বে জাসদের সশস্ত্র শাখা,গণবাহিনী সরকারের সমর্থক,আওয়ামীলিগের সদস্য ও পুলিশ দের হত্যার মাধ্যমে অভ্যুত্থানে লিপ্ত হয় এর ফলে দেশের আইন শৃংখলার সম্পূর্ণ ভাঙন ধরে এবং শেখ মুজিব হত্যাকান্ড সংঘটিত হবার পথ প্রশস্ত করে দেয়.১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট ভোর সাড়ে পাঁচ টায় ষড়যন্ত্রকারীরা চারটি দলে বিভক্ত হয়।হত্যাকান্ডের শিকার হন শেখ মুজিবের স্ত্রী শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব,।শেখ মুজিবের ছোট ভাই শেখ নাসের,দুইজন চাকর,শেখ জামাল, ১০ বছর বয়সী শেখ রাসেল,দুই পুত্রবধূ ।সে সময় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা এবং সশেখ রেহেনা পশ্চিম জার্মানীতে ছিলেন।
বঙ্গবন্ধুর শরীরে ছিল ১৮ টি গুলি।দু পায়ের গোড়ালীর ২ রগই ছিল কাটা,মৃত্যুর পরেও গায়ের পাঞ্জাবীর বুক পকেটে চশমা,সাইড পকেটে তার প্রিয় পাইপ এবং গায়ে সাধারন তোয়ালে জড়ানো ছিল।মিলিটারিরা রক্তাক্ত কাপড়চোপড় সহ বিনা গোসলে লাশ কবর দেয়ার নির্দেশ দেন.১৮ টি গুলির মধ্যে ৯ টা গুলি লেগেছিল বুকের নীচে।
এ দেশ আমার পিতাকে কেড়ে নিয়ে দিয়ে গেছে এক গভীর কালো স্তব্ধ ছায়া।
শেখ মুজিবুর রহমান নামটি খুব গৌরবের নাম,যা শুনলে শরীরের শিরায় শিরায় অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যাবার এক চেতনা জাগিইয়ে তোলে।
ফিরে যাই ১৯৭২ এ-
“বাংলার মেয়েরা হানাদার বাহিনীর হাতে ধর্ষন-নির্যাতনের শিকারের পর ঘরে ফিরে পেল মানসিক নির্যাতন,বাবা মেয়েকে ঘরে তুলতে অস্বীকার করলো,স্বামী বুকে তালাক দিলো।এ খবর গেল ধানমন্ডির ৩২ এ শেখ মুজিবের কানে।বুক চাপড়ে কেঁদে কেঁদে বললেন তিনি –
কেউ যদি বীরাঙ্গনার পিতার নাম জিজ্ঞেস করে তবে বলে দিয়ো তাদের পিতা “শেখ মুজিবুর রহ্মান”আর তাদের ঠিকানা স্থানে লিখে দিয়ো ধানমন্ডি ৩২ নম্বর!”
উনি আমার জাতির পিতা,বিনম্র শ্রদ্ধায় মাথা নত করে বলতে ইচ্ছে করে বাবা তুমি ফিরে এসো আমাদের বাঁচার জন্য তোমাকে দরকার!আমাদের জাতির ক্রান্তিকালে এসে দাড়িয়েছে আজ তোমাকে আমাদের দরকার।আমরেয়া মুজিব বুকে ধারন করি,লালন করি!
আজ জাতীয় শোক দিবসে তোমাকে জানাই আমার বিনম্র শ্রদ্ধা,ভালবাসা।
No comments:
Post a Comment