এ বয়স জেনো ভিরু,কাপুরুষ নয়পথ চলতে এ বয়স যায় না থেমে,এ বয়সে তাই নেই কোন সংশয়-এ দেশের বুকে আঠারো আসুক নেমে।।
সুকান্তের এ কামনাই যেন বর্তমানে ঢাকার রাজপথের দৃশ্যপটকে ধারণ করে। কেননা গত রোববার ঢাকার বিমানবন্দর সড়কের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে জাবালে নূর পরিবহনের বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী মারা যাবার পর থেকে স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীদের মাঝে আন্দোলন দানা বেঁধে উঠতে থাকে। আর সেই দানা বেঁধে উঠতে থাকা আন্দোলনই উত্তাল রূপ ধারণ করে আজ পঞ্চম দিনে পা দিয়েছে।
জানা যায়,গত রোববার ঢাকার বিমানবন্দর সড়কের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনের বাসস্ট্যান্ডে শহীদ রমিজ উদ্দিন কলেজের শিক্ষার্থী দিয়া খানম মিম ও আবদুল করিম রাজিব বাসের অপেক্ষায় দাড়িয়ে ছিলেন। সে সময় জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাস তাদের দুইজনকে দ্রুত চাপা দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। এ ঘটনার সূত্র ধরে সেদিন থেকেই শিক্ষার্থীদের মাঝে আন্দোলন শুরু হয়। তারা "নিরাপদ সড়কের'' দাবি এবং নৌ ও পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানের পদত্যাগসহ ৯ দফা দাবি নিয়ে রাজধানীর মতিঝিল,নিউমার্কেট,শাহবাগ,ফার্মগেট,সায়েন্সল্যাব,মোহাম্মদপুর সহ প্রধান সড়কগুলো অবরোধ করে রাখে।
এ আন্দোলন শুধু ঢাকায় নয়,ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। এর মধ্যে রয়েছে কেরানিগঞ্জ,সাভার, কুষ্টিয়া, বগুড়া, নোয়াখালী, ময়মনসিংহ সহ দেশের নানা অঞ্চল। যদিও গত চারদিনে আন্দোলন ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ায় সরকার আজ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তবুও আজ পঞ্চম দিনের মত একইভাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রধান সড়কগুলো অবরাধ করে রেখেছে শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা শুধু সড়ক অবরোধ করেই ক্ষান্ত হয়নি, বরং রাস্তায় চলাচলরত সব যানবাহনের লাইসেন্স চেক করছেন তারা। এমনকি লাইসেন্সবিহীন চালকদের গাড়ি আটকিয়ে রেখে প্রতিবাদে এক নতুন মাত্রা এনে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল দনিয়া দমদম কলেজের শিক্ষার্থীরা লাইসেন্স চেক করার জন্য একটি ট্রাক কে হাত দেখিয়ে থামতে বললে ট্রাকটি না থেমে একটি শিক্ষার্থী কে চাপা দিয়ে চলে যায়। ফয়সাল নামের সেই শিক্ষার্থী আপাতত চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন। তাছাড়া গতকাল বেশ কিছু লাইসেন্সবিহীন পুলিশের গাড়ি চিহ্নিত করার অভিযোগ তুলেন ছাত্রছাত্রীরা। এরই প্রেক্ষিতে আজ ডিএমপি পুলিশ কমিশনার সকল পুলিশের গাড়ির চালককে লাইসেন্সসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাথে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
উল্লেখ্য,গতকাল উলটো দিক দিয়ে গাড়ি নিয়ে যাবার সময় বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ শিক্ষার্থীদের সামনে আটকা পড়ে প্রতিবাদের মুখে গাড়ি নিয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হন।
সরকারের তিনজন মন্ত্রী আনিসুল হক, ওবায়দুল কাদের ও আসাদুজ্জামান খান শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দিলেও শিক্ষার্থীরা আশ্বস্ত হতে না পারায় আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এ দুর্ঘটনার প্রেক্ষিতে জাবালে নূর পরিবহনের লাইসেন্স বাতিলসহ একজন চালককে আটক করেছে পুলিশ।
আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিয়া ও করিমের পরিবারকে ২০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র অনুদান দিয়েছেন।
এদিকে আজ রাজধানীর ফার্মগেটে এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম শিক্ষার্থীদের ঘরে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন "অপরাধীদের অবশ্যই শাস্তি হওয়া উচিত।
No comments:
Post a Comment