লিখতে পারছিনা। না বিশ্বাস করুন ভনিতা নয়, ড্রামাটিক স্টার্ট করবার জন্য নয়। গতকাল বসেছিলাম, আজ আবারো বসলাম। আজ যাই বের হবে তাই লিখবো। এখানে সাহিত্য বা শিল্প মারাতে বসি নি-তো।
নিজে অল্পবিস্তর সিনেমা শিল্পের সাথে যুক্ত, প্রতিদিন চেষ্টা করে চলেছি নিজের শিল্পসত্তার বাণিজ্যিকরনের। ফিরছি ব্যর্থ মনোরথে। রুমে ফিরে তাই অল্প বিস্তর গান-কবিতায় "ট্রান্সে" যেতে ভালোই লাগে। কিন্তু মাঝে মাঝে কি যেনো একটা আওয়াজ করে উঠি। রুমের বন্ধুবর জিজ্ঞেস করে ওঠে এতো হওয়াতে "কিস" করিস কেন, আওয়াজ টা ওরকম'ই আরকি..
যাইহোক লাস্ট রবিবার দুপুরে একটি গান কে সুর দেওয়ার কাজ চলছিল। গানটি আবার ক্ল্যাসিকাল ঘরানার। আমি খেয়ে-দেয়ে উঠে স্ক্রিপ্ট লিখতে বসবো। হঠাৎই ফেসবুকের একটা নিউস ফিডে চোখ আটকে যায় । নিউস টা এরকম, মালদার এক কলেজের ছাত্ররা বিগত ১২দিন ধরে পরে আছে কলকাতার ফুটপাতে "বৈধ সার্টিফিকেটের" দাবীতে, ভয়ঙ্কর অন্যাজ দাবি। ভাবুন আপনি ৩বছর একটা কলেজে লাখ লাখ টাকা খরচ করে পড়লেন তার পর জানলেন আপনি এখনো উচ্চমাধ্যমিক পাশ। অজান্তেই হওয়ায় চুমু খেয়ে ফেলি, সুর তৈরির ক্ল্যাসিক্যাল প্রচেষ্টায় ব্যাঘাত ঘটে। বন্ধু জিজ্ঞেস করে ওঠে তুই এতো "হারমোনিলেস" কেনো, এতো ফাস্ট্রেশন কীসের?
খুব রাগ হয়। সামলে নেই নিজেকে। আসলে রাগ টা ওর প্রতি নয়, নিজের প্রতি।"শিল্প-শিল্পী" এই প্যারামিটার তার প্রতি, বোকাচোদা বাঙালির প্রতি। যারা বাংলাদেশের আন্দোলনে গর্ববোধ করে বিপ্লব চোদায়। নেতাজী বেঁচে না মরে তা নিয়ে তুফান তোলে, আমরা কি সত্যিই স্বাধীন প্রশ্ন তোলে; না,পার্লামেন্টে নয়, রাস্তায় নয় অনলি ফেসবুকে। প্রচন্ড পেট খারাপ ফুট পয়জনিং-এ, আশেপাশে বাথরুম নেই। দেহতত্ব আসবে তো বাঙালি। বৃষ্টিতে ত্রিপাল উড়ে যাচ্ছে, একাডেমির পাশের লাইটগুলি ইচ্ছাকৃত ভাবে বন্ধ;তারপরও আপনি বৃষ্টি চাইবেন জানলার দিকে তাকিয়ে, ভাব আনতে হবে যে। আপনার বান্ধবী বা প্রিয়তমা ন্যায্য দাবি নিয়ে লড়ে যাচ্ছে মালদায় প্রায় আড়াই বছর ধরে আর কলেজের ল্যাব-এসিস্ট্যান্ট বলছে, "সিসিটিভি না থাকলে রেপ করে ঢুকিয়ে দিতাম। আপনি একাডেমিতে পেটে খিদে নিয়ে ফোনে তার আকুতি শুনছেন, আসবে তো সুর, হারমোনি? আমিও সুরের পূজারী। জীবনে সব থেকে বেশি হিংসে করি পেইন্টার আর সুরকার দের, নিজে করতে পারি না বলে। কিন্তু এই বেলা সমস্ত শিল্প কে খুন করতে ইচ্ছা করছে।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ওরা বসেছে কোথায়; নন্দনে, একাডেমি চত্বরে। ওদের চাকরির দাবি নেই।খালি বৈধ সার্টিফিকেটের দাবি। রবিবারের দুপুরে বাঙালির এতে রক্ত গরম হয় না, একাডেমির ভেতরে এসি রুমে তাদের রক্ত গরম করতে "মঞ্চের বাস্তব" লাগে। সাবাশ বাঙালি, সরি সাবাস বকচোদ, ইন্টেলেক-শিল্পী বাঙালি।।
আর লিখতে পারছি না। অনেক সময়ই রাতে শোয়ার সময় খাতা, পেন থাকে। কাশ বালিশের পাশে পিস্তল থাকতো। আরে দাদা মৃদু মৃদু হাসবেন না, আবেগী ভাববেন না। ২৫পেরিয়ে গেছি, বিপ্লবকে ফ্যান্টাসইজ করি না , হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালাও হতে চাই না। পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতিতে হয়তো আগামী দিনেও বন্দুক হাতে নিতে পারবো না, হয়তো আবার ওই সিনেমাতেই ঢুকে যাবো। কিন্তু এই ভাবে চলতে থাকলে আগামীতে কেউ একজন, হ্যাঁ ঠিক কেউ একজন বন্দুক তুলে নেবে, ধ্বংস করবে শিল্প ও শিল্পীকে। হ্যা সেইদিন তার বুলেটে আমারো নাম লেখা থাকবে হয়তো শিল্পী হিসেবেই। তবে বিশ্বাস করুন হলে তা ভালোই হবে।
এখনো সময় আছে পাশে দাঁড়ান ছাত্রগুলোর, সাথে হাঁটুন, চিৎকার করুন, চিৎকার। না হলে প্রতারিত করবেন নিজেকে, আর আপনার ওই শিল্প চেতনাকেও....
- অনিয়ান রায়
No comments:
Post a Comment