- অয়নিতা সাহা
শক্ত কালো লোহার গেটটা ধরে সে দাঁড়িয়ে আছে,
তার দৃষ্টি মিশে গেছে কিছুটা দূরে, বন্ধ গেটের ওপারে একটা কবরখানায়।
দেখতে আর পাঁচটা সাধারণ কবরখানার মত হলেও কবরগুলোর ভেতর সব আলাদা।
প্রতিটা কবর আসলে একটা ঘর। প্রতিটা ঘরের ভেতর বন্দি আছে সময়।
হ্যাঁ সময়, এক একটা সময়--এক একটা অধ্যায়।
মিথ্যে হাসি-কান্নার মুহূর্ত, প্রতিশ্রুতি, অপেক্ষা; মিথ্যে যাপন।
প্রতারকগুলোকে সব আটকে ফেলেছে কবরে, অপরাধ লুকিয়ে তারা আর পালাতে পারবে না। সেখানেই আটকে থাকবে চিরটাকাল।
সেখানে যেখানে কোনো আলো নেই, হাওয়া নেই, নেই কোনো দরজা; প্রতিবেশীর মুখ তারা দেখতে পায় না।
শুধু দেখে নিজেদের মুখোশহীন অসংখ্য প্রতিচ্ছবি।
কারণ ঘরগুলো আয়নায় মোড়া, কোনো দেওয়ালে
এক চিলতে জায়গা নেই যেখানে মুখ লোকাবে।
যখন ক্ষমাভিক্ষা করে তখন সেইসব পরিত্রাহী চিৎকার
নিশ্চিদ্র ঘরের দেওয়ালে ধাক্কা খেয়ে ফিরে ফিরে আসে, আবর্ত তৈরি হয়।
অপরাধীর দল নিজের নিজের আবর্তে ঘুরে ঘুরে মরে-- পরিত্রাণ নেই।
দিন যায়, রাত যায়, মৃত্যু আসে না।
বাইরে সব নিস্তব্ধ। আর পাঁচটা কবরখানার মত। পরপর সাজানো শ'য়ে শ'য়ে কবর।
গেটের ওপারে বিধাতা হাসে। বিধাতা নিজের বিচার নিজে করে।
No comments:
Post a Comment