সাল
১৯৪২,দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ তখন প্রায় মাঝপথে,ক্ষমতা দখল নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত বিশ্ব।ভারতবর্ষ তখন
ব্রিটিশ শাসনাধীন তবুও উত্তাল ভীষণ। ব্রিটিশ পুলিশের অত্যাচার সীমা ছাড়িয়েছে। ঠিক
সেইসময় ভারতবর্ষ থেকে খানিক দূরে, সিঙ্গাপুরে চলছে এক সম্মুখ সংগ্রামের প্রস্তুতি
,নেতৃত্বে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোস।তৈরী হয়েছে INA (Indian National Army)।অত্যন্ত
দূরদৃষ্টিসম্পন্ন সুভাষ যুদ্ধে ভীষন ভাবে অনুভব করলেন নারীশক্তির।যেই বলা সেই
কাজ।তৈরী হল মহিলাদের নিয়ে 'ঝাসির রানী
ব্রিগেড'।কিন্তু এই প্রায় ১০০০ জন নির্ভীক নারীদের যুদ্ধে নেতৃত্ব দেবেন কে? এগিয়ে
এলেন একজন বীরঙ্গনা, যিনি এতদিন INA এর চিকিৎসা বিভাগ সামলাচ্ছিলেন।তার নাম ডঃ
লক্ষ্মী স্বামীনাথন।
সুযোগ্য নেতৃত্বে এগিয়ে নিয়ে গেলেন ব্রিগেড,সর্বস্ব ত্যাগ করে
পুরুষ যোদ্ধাদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়লেন মাতৃভূমিকে শৃঙখল মুক্ত করবার
উদ্দেশ্যে।লক্ষ্মীর জন্ম ১৯১৪ সালের ২৪ অক্টোবর, দক্ষিন ভারতের মাদ্রাজে।খুব
ছোটবেলার বাবা কে হারালেও হার মানেননি তিনি।প্রথমে কুইন মেরী কলেজ তারপর মাদ্রাজ
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে MBBS করলেন, সালটা ১৯৩৮।কিছুদিন চেন্নাই এর কস্তুরবা মেডিক্যাল
কলেজে ডাক্তারি করলেও ১৯৪০ সালে তিনি চলে গেলেন সিঙ্গাপুর।সেখানে তার পরিচয় ঘটল
নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর সাথে,বদলে গেল জীবন টা;
দীক্ষিত হলেন স্বাধীনতা ফিরে
পাবার যুদ্ধে, ডাক্তার হিসাবে যোগ দিলেন INA তে।প্রবল পরাক্রম সহযোগে INA বাহিনী
ভারতের মনিপুর পর্যন্ত দখল করে নেওয়া সত্ত্বে,বিশ্বযুদ্ধে জাপান আত্মসর্মপন করায়
পুরোপুরি সফল হয়ে ওঠেনি।অগত্যা ধরা পড়লেন।ব্রিটিশ পুলিশ তাকে চালান করল বার্মা
জেলে (১৯৪৫)।১৯৪৬ সালে ছাড়া পান।১৯৪৭ সালে বিয়ে করেন P K N Sahegal কে।১৯৭১ সালে
যোগ দিলেন ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টিতে( Marxist)। ঝাপিয়ে পড়লেন মুক্তিযুদ্ধের সময়
রিফিউজি রিলিফ ক্যাম্পে এবং শুশ্রুষা করতে।
১৯৮১ সালে প্রতিষ্ঠা করেন All India Democratic
Women's Association।এছাড়া সারাটাজীবন ধরে বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজ করে
গেছেন তিনি।
ভারত সরকার ১৯৯৮ সালে তাকে 'পদ্মবিভূষন' দেয় সম্মানস্বরুপ।অবশেষে ২০১২ সালে ২৩ শে জুলাই ৯৮ বছর বয়সে মারা যান ভারতমাতার এই বীরঙ্গনা।শুধু স্বাধীনতা আন্দোলন নয়, এক নারীশক্তির প্রতীক হিসাবে আমাদের হৃদয়ে চিরকাল অম্লান থাকবেন এই অসামান্য নারী।স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে আমার, তাকে সশ্রদ্ধ প্রণাম।
ভারত সরকার ১৯৯৮ সালে তাকে 'পদ্মবিভূষন' দেয় সম্মানস্বরুপ।অবশেষে ২০১২ সালে ২৩ শে জুলাই ৯৮ বছর বয়সে মারা যান ভারতমাতার এই বীরঙ্গনা।শুধু স্বাধীনতা আন্দোলন নয়, এক নারীশক্তির প্রতীক হিসাবে আমাদের হৃদয়ে চিরকাল অম্লান থাকবেন এই অসামান্য নারী।স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে আমার, তাকে সশ্রদ্ধ প্রণাম।
No comments:
Post a Comment