কাজী নজরুল ইসলাম সমীপেষু
তোলো শির,তোমাকে দরকার আজ অসহায় তরুণীর,
কতদিন ঘুমাইবে সোনার কবরে,জাগো ওহে বীর।
শাঁখের আওয়াজে কাঁপে গগন,
জাগ্রত মন্দিরে নাকি হইয়াছে আজ জ্যান্ত দেবীর
আগমন।
ওঠো বীর,
লজ্জায় নত করিও না, তোমার উন্নত শির।
ওঁরা শোনায় মুক্তির বাণী,
শীর্ণ-জীর্ণ বস্ত্র আবৃত কঙ্কালসার দেহ দেখে দেয়
মন্দিরে চাবি।
পাষান দেবীকে সাক্ষী রেখে ধর্ষিত হয় বঙ্গনারী,
ধর্ষিতার গর্জন আজ তির হইয়া ঝরিয়া পড়ুক দেবতার
বুকে,
বুদ্ধিজীবী, গুনিজনেরা ব্যস্ত আজ, নিজ সুখে।
জাগো বীর, তোলো হুঙ্কার,
হস্তে তুলিয়া লও, গগনভেদী বজ্রকুঠার।
ওরা শয়তান,ওরা নিকৃষ্ট জড়ো,
ভগবানের ভয় পায় না ওরা,নয়গো তোমার চেয়ে বড়ো।
তাই করো পদাঘাত,তীব্র কষাঘাত হানো,
কঙ্কালে ভরা শশ্মান ঘাটে মনুষ্য শক্তি জ্বালো।
আজও বাতাসে , লাশের গন্ধ ভাসে,
মহামারীর এই সন্ধিক্ষণে শুধু চিল- শকুনেরা হাসে,
ধর্ষিতাদের কাহানি লিখিতে বসিয়া , অন্তরে ঘনিয়া
আসিতেছে ভয়
অশ্রুভরা চক্ষু মুছিবার লাগি,শখের কলম দোয়াতে
রাখিতে হয়।
ওঠো বীর, তোলো শির,
বাড়াও শক্তি পদাঘাতের , হোক না লক্ষ শকুনের ভীড়।
অমূল্য স্বাধীনতা দিয়েছিলে, নিজের রক্তে লাল
করেছিলে যাঁর মাটি,
করো বজ্রাঘাত সেই পাপীদের,যারা মানুষকে দেখায়,
সোনার পাথর বাটি।
ছেটে ফেলো সব জঞ্জাল,
চালের গুদামে যেনো না জমে আর কোনো কঙ্কাল।
ওহে বীর,
তুমি চির উন্নত শির।
No comments:
Post a Comment