১৮৬৯ সালে
তমলুকের অদূরে হোগলা নামে একটি ছোটো গ্রামে এক দরিদ্র কৃষক পরিবারে তাঁর জন্ম
হয়েছিল। দারিদ্র্যের কারণে বাল্যকালে প্রথাগত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন
মাতঙ্গিনী।অতি অল্প বয়সেই তাঁর বিয়ে হয়ে যায় কিন্তু মাত্র আঠারো বছর বয়সেই
নিঃসন্তান অবস্থায় বিধবা হয়েছিলেন। তিনি মাতঙ্গিনী হাজরা, ভারতের
স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী এক মহান বিপ্লবী নেত্রী।
ইংরেজ রাজত্বের প্রথম দিকেই বাংলা
পরাধীনতার শৃঙ্খল পরেছিল। ধীরে ধীরে সারা ভারতবর্ষকেও পরতে হয়েছিল ব্রিটিশ
সাম্রাজ্যবাদের নাগপাশ। কিন্তু এই বাংলাদেশই ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে
সংগ্রামে অগ্রণীর ভূমিকা গ্রহণ করেছিল। বলাবাহুল্য, চরমপন্থা ও
সন্ত্রাসবাদের পীঠস্থান হয়ে উঠেছিল এই বাংলাই। নারী-পুরুষ
সমবেতভাবেই ইংরেজ সরকারের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছিল। সন্ত্রাসের নায়িকাদের
মধ্যে যেমন প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, শান্তি ঘোষ, সুনীতি
চৌধুরী, কল্পনা দত্ত, বীণা দাশ ও উজ্জ্বলা মজুমদার
প্রভৃতির নাম অমর হয়ে রয়েছে, ঠিক তেমনি সন্ত্রাসবাদ পরিহার করেও
যেসব বীরাঙ্গনারা জ্বলন্ত দেশপ্রেম ও আত্মত্যাগের দৃষ্টান্তে দেশবাসীদের উদ্বুদ্ধ
করে গেছেন মাতঙ্গিনী হাজরা ছিলেন তাঁদেরই মধ্যে অন্যতমা। আর একটি দিক থেকেও এঁদের
মধ্যে পার্থক্য লক্ষ করা যায়। তা হল এই যে ওইসব নারীরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ছিলেন
তখনকার নিরিখে শিক্ষা-দীক্ষায় আলোকপ্রাপ্তা ও আধুনিকা। কিন্তু
মাতঙ্গিনী ছিলেন সম্পূর্ণরূপে নিরক্ষরা রমণী। তবে নিরক্ষর হলেও তিনি ছিলেন ভারতের
নারীদের মুকুটমণি স্বরূপা- ‘ বিয়াল্লিশের অগাস্ট আন্দোলনের
মূলমন্ত্র ছিল- ‘করেঙ্গে ইয়ে মরেঙ্গে’ (করো, না হয় মরো)। স্বীকার
করতেই হয় যে মাতঙ্গিনী জীবন বিসর্জন দিয়ে এই মন্ত্রের আরাধনায় সিদ্ধি লাভ
করেছিলেন।
ছোট্ট
গ্রাম হোগলা। মেদিনীপুর জেলার তমলুক থানার এলাকাধীন। ওই গ্রামে অতি গরিব এক চাষি
পরিবারে জন্মেছিলেন মাতঙ্গিনী। তখনকার দিনে অনেক ভদ্র পরিবারের মধ্যেও জন্মতারিখ
রাখা হত না। আর মাতঙ্গিনীর জন্ম তো গরিব ও নিরক্ষর এক চাষি পরিবারে। তবুও
ঐতিহাসিকরা অনেক চেষ্টা-চরিত্র করে বার করেছেন তাঁর জন্মের
সালটি। সেটি হল ইংরাজির ১৮৭০ সাল। তবে সঠিক তারিখটি আজও জানা যায়নি। তাঁর বাবার
নাম ছিল ঠাকুরদাস মাইতি। চাষবাস করে তিনি কোনরকমে সংসার চালাতেন। মায়ের নাম ছিল
ভগবতী মাইতি। পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্রের বাবা ও মায়ের নামের সঙ্গে আশ্চর্য রকমের মিল।
গরিব চাষির ঘর। তার ওপর আবার কন্যা সন্তান। তখনকার দিনে অবস্থাপন্ন
ঘরের ছেলেদের মধ্যেই লেখাপড়ার তেমন চল ছিল না। সুতরাং মাতঙ্গিনীরও লেখাপড়া হয়নি
একেবারেই। এগারো বছর বয়স হতে না হতেই বিয়ে হয়ে গেল তাঁর। পাশেই আলিনান গ্রাম।
পাত্র ওই গ্রামেরই ত্রিলোচন হাজরা। কিন্তু মাতঙ্গিনীর বিবাহিত জীবন বেশিদিন স্থায়ী
হল না। মাত্র আঠারো বছর বয়সেই স্বামীকে হারালেন তিনি। ছেলে-মেয়েও কিছু
হয়নি। সাত বছরেই সংসার-জীবন শেষ। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই দীক্ষা
নিয়ে নিলেন। ভাবলেন ধর্ম-কর্ম করেই জীবনটা কাটিয়ে দেবেন।
ওই সময়ের
কিছু আগে-পরে স্বামী বিবেকানন্দ দেশবাসীদের উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন- এখন থেকে
আগামী পঞ্চাশ বছর তোমাদের একমাত্র উপাস্য দেবতা হবেন- জননী-জন্মভূমি।
তাঁর পূজো করো সকলে।’ স্বামীজির কথাটা মাতঙ্গিনীকে বিশেষভাবে স্পর্শ করেছিল। তিনি
মনেপ্রাণে বিশ্বাস করলেন দেশকে বিদেশির শাসনমুক্ত করে দেশবাসীর মুখে হাসি ফোটানোর
চেয়ে বড়ো ধর্ম আর কিছুই থাকতে পারে না। তাই সুযোগের অপেক্ষায় রইলেন। সে সুযোগ
সত্যিই এল যখন গান্ধীজি পরিচালিত আইন অমান্য আন্দোলনের (১৯৩০-৩৪) ঢেউ
মেদিনীপুরেও আছড়ে পড়ল। এদিকে বিপ্লবতীর্থ মেদিনীপুরের শাসনব্যবস্থা তখন প্রায় ভেঙে
পড়ার মুখে সন্ত্রাসবাদীদের দাপটে। তিন-তিনজন জাঁদরেল জেলা
ম্যাজিস্ট্রেট পেডি, গডলাস ও বার্জ প্রাণ হারিয়েছেন
সন্ত্রাসবাদীদের হাতে। এক কথায় বলা যায় শাসককুল মেদিনীপুরের নাম শুনলেই বিশেষভাবে
আতঙ্কিত ও দিশেহারা হয়ে পড়তেন।
১৯৩০ সালের
মার্চ-এপ্রিল মাসে শুরু হল লবণ সত্যাগ্রহ আইন অমান্য আন্দোলন। দেশবাসীর
পক্ষে সমুদ্র-জল থেকে লবণ সংগ্রহ করা তখন বেআইনি ছিল। দেশের যে যে জায়গায় লবণ
তৈরির সুযোগ ছিল সত্যাগ্রহীরা সেইসব জায়গায় লবণ তৈরি করে আইন-অমান্য
করতে লাগলেন। মেদিনীপুরের কাঁথিতেই প্রথম লবণ তৈরি শুরু হল। খবর পেয়েই পুলিশ
গ্রামে ঢুকল। ঘর-বাড়ি সব জ্বালিয়ে দিল। নানান অত্যাচার শুরু
করে দিল। তবুও মেদেনীপুর শায়েস্তা হল না। শাসককুল চাইল লবণ তৈরির একচেটিয়া অধিকার
তাদের হাতে থাকুক। কিন্তু দেশের মানুষ চাইল লবণ তৈরির ক্ষেত্রে অবাধ স্বাধীনতা।
আইন অমান্য আন্দোলনে মাতঙ্গিনীও
ঝাঁপিয়ে পড়লেন। বন্দে মাতরম ধ্বনিতে আলিনান গ্রামের আকাশ-বাতাস
মুখরিত হয়ে উঠল। খবর পেয়েই পুলিশ এল। মাতঙ্গিনী গ্রেপ্তার হলেন সঙ্গে রইলেন
অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকরাও। তাঁরাও গ্রেপ্তার হলেন। এ দুর্ভোগ অবশ্য বেশিক্ষণ সইতে
হয়নি। কিছুটা পথ হাঁটিয়ে নিয়ে গিয়ে মাতঙ্গিনীকে ছেড়ে দেওয়া হল।

এর পরের ঘটনা ১৯৩৪/১৯৩৫ সালে।
অবিভক্ত বাংলার লাটসাহেব মি. অ্যান্ডারসন জেদ ধরলেন তমলুকে দরবার
করবেন। সে এক হৈ হৈ রৈ রৈ কাণ্ড। মেদিনীপুরের বরাবরই রয়েছে বৈপ্লবিক ঐতিহ্য।
মেদিনীপুরবাসীরা তাই দৃঢ়প্রতিজ্ঞ লাটসাহেবকে এই দরবার তারা কিছুতেই করতে দেবে না।
তাঁরা দেখিয়ে দিতে চায় যে তারা আর কিছুতেই ইংরেজদের গোলামি করতে রাজি নয়। এদিকে
ইংরেজ সরকারও তাদের সংকল্পে অটল। সুতরাং সংঘাত অনিবার্য হয়ে উঠল।
জেদের বশে লাটসাহেব
তমলুকে সেই দরবার করতে এলেন। সমস্ত প্রস্তুতি যখন প্রায় শেষ এমন সময় হাজার কণ্ঠে
ধ্বনি উঠল ‘লাটসাহেব তুমি ফিরে যাও- ফিরে যাও। তোমার কোন কথা আমরা শুনতে
রাজি নই। ঢের হয়েছে। তোমাদের দাসত্ব আর আমরা সহ্য করতে পারছি না। আমরা চাই তোমাদের
হাত থেকে মুক্তি। বন্ধ করো তোমাদের শোষণ ও লুণ্ঠন। বন্ধ করো তোমাদের পুলিশি জুলুম।
লাটসাহেব তুমি ফিরে যাও।' আকাশ বাতাস মুখরিত হয়ে উঠল, বন্দে
মাতরম, ধ্বনিতে।
শোভাযাত্রা এগিয়ে চলল দরবারের দিকে। শত শত
পুলিশও হাজি হাতে লাঠি ও বন্দুক নিয়ে। শোভাযাত্রীদের পথ আটকাল ওই পুলিশবাহিনী।
পুরোভাগেই ছিলেন-মাতঙ্গিনী নিজে। পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করল।
এবার কিন্তু তাঁকে আর এমনিতে ছেড়ে দেওয়া হল না। রীতিমতো বিচার হল। মাতঙ্গিনী দুমাস
সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলেন। বিচারের রায় ঘোষণার পর হাসিমুখে বলেছিলেন তিনি-দেশের জন্য, দেশকে
ভালোবাসার জন্য দণ্ডভোগ করার চেয়ে বড়ো গৌরব আর কী আছে। মাতঙ্গিনীকে অমর করে রেখেছে
১৯৪২ সালের অগাস্ট বিপ্লব। ১৯৩৮ সালের জুলাই মাসে হরিপুরা কংগ্রেসের সভাপতি
সুভাষচন্দ্র-ভারত ছাড়ো বা কুইট ইন্ডিয়া — এই ধ্বনি দিয়ে ব্রিটিশের বিরুদ্ধে
আন্দোলন শুরু করতে গান্ধীজিকে অনুরোধ করেন। কিন্তু সেটা প্রায় ৪ বছর দেরী হোল।
অবশেষে ১৯৪২ সালের ৯ আগস্ট তারিখে ওই আন্দোলনের গুরুত্ব উপলব্ধি করে মহাত্মাজি-ভারত ছাড়ো
আন্দোলনের ডাক দেন। দেশনায়ক সুভাষচন্দ্রের প্রজ্ঞা ও দূরদৃষ্টির সঙ্গে যুক্ত হল
জাতির জনকের আবেগ। হিংসা ও অহিংসা একসূত্রে গাঁথা হয়ে যাওয়ায় ভারতের স্বাধীনতা
সংগ্রামের ধারা এক নতুন মাত্রা পেয়ে যায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাজেহাল ইংল্যান্ডকে
ক্ষমতাচ্যুত করার একটা সুবর্ণসুযোগ দেখা দেয়। অবশ্য ঐতিহাসিক অমলেশ ত্রিপাঠীর মতে
দেরিতে শুরু করার জন্যই সাফল্যের সম্ভাবনা ব্যর্থ হয়ে যায়।
১৯৪২-এর ২৯
সেপ্টেম্বর। অগাস্ট বিপ্লবের জোয়ার তখন মেদিনীপুরে আছড়ে পড়েছে। ঠিক হয়েছে এক সঙ্গে
তমলুক, মহিষাদল, সুতাহাটা ও নন্দীগ্রাম থানা আক্রমণ
করে দখল করে নেওয়া হবে।
মাতঙ্গিনী স্বেচ্ছাসেবকদের বোঝালেন
গাছ কেটে ফেলে রাস্তা-ঘাট সব বন্ধ করে দিতে হবে। টেলিফোন ও
টেলিগ্রাফের তার কেটে দিতে হবে। বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিতে হবে। পাঁচদিক থেকে
পাঁচটি শোভাযাত্রা নিয়ে গিয়ে তমলুক থানা এবং একই সঙ্গে সমস্ত সরকারি অফিসগুলি দখল
করে নিতে হবে।
যেমন কথা
তেমনি কাজ। ২৯ সেপ্টেম্বর পাঁচটি দিক থেকে পাঁচটি শোভাযাত্রা এগিয়ে চলল তমলুক
অধিকার করতে। হাজার হাজার মেদিনীপুরবাসী শামিল হয়েছিলেন ওই শোভাযাত্রায়। হাতে
তাদের জাতীয় পতাকা। মুখে গর্জন ধ্বনি –ইংরেজ ভারত ছাড়ো- করেঙ্গে
ইয়ে মরেঙ্গে- বন্দে মাতরম্।
মাতঙ্গিনী
স্বেচ্ছাসেবকদের বোঝালেন গাছ কেটে ফেলে রাস্তা-ঘাট সব
বন্ধ করে দিতে হবে। টেলিফোন ও টেলিগ্রাফের তার কেটে দিতে হবে। বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ
করে দিতে হবে। পাঁচদিক থেকে পাঁচটি শোভাযাত্রা নিয়ে গিয়ে তমলুক থানা এবং একই সঙ্গে
সমস্ত সরকারি অফিসগুলি দখল করে নিতে হবে।
যেমন কথা
তেমনি কাজ। ২৯ সেপ্টেম্বর পাঁচটি দিক থেকে পাঁচটি শোভাযাত্র এগিয়ে চলল তমলুক
অধিকার করতে। হাজার হাজার মেদিনীপুরবাসী শামিল হয়েছিলেন ওই শোভাযাত্রায়। হাতে
তাদের জাতীয় পতাকা। মুখে গর্জন ধ্বনি –ইংরেজ ভারত ছাড়ো- করেঙ্গে
ইয়ে মরেঙ্গে- বন্দে মাতরম্।
পশ্চিমদিক
থেকে এগিয়ে এল আট-দশ হাজার মানুষের এক বিরাট শোভাযাত্রা।
গুর্খা ও ব্রিটিশ গোরা সৈন্যরা তৈরি হল অবস্থার মোকাবিলার জন্য। হাঁটু মুড়ে বসে
গেল তারা। তারপরই তাদের বন্দুকগুলো গর্জে উঠল। মারা গেলেন পাঁচজন। আহত হলেন আরও
বেশ কয়েকজন। আহত রামচন্দ্র বেরার দেহটা টানতে টানতে থানার সামনে এনে ফেলে রাখল কোন
এক ব্রিটিশ জমি। জ্ঞান ফিরে আসতেই সবার অলক্ষ্যে রামচন্দ্র বেরা বুকে হেঁটে থানার
দিকে এগিয়ে চলল। থানা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করেই উল্লাসে ফেটে পড়ে বলে উঠলেন- ‘থানা দখল
করেছি।’ তারপরই তাঁর শরীর নিথর নিস্পন্দ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল।
উত্তর দিক
থেকে আসছিল মাতঙ্গিনীর দলটি। তারা থানার কাছাকাছি আসতেই পুলিশ ও মিলিটারি অবিরাম
গুলিবর্ষণ শুরু করে দিল। বিদ্রোহীদের মধ্যে থেকে বেশ কয়েকজন কিছুটা পিছু হঠে
গিয়েছিল। তাদের সতর্ক করে দিয়ে মাতঙ্গিনী বললেন-থানা কোন্
দিকে? সামনে, না পেছনে? এগিয়ে চলো।
হয় থানা দখল করো, নয়ত মরো। বলো- করেঙ্গে
ইয়ে মরেঙ্গে বন্দে মাতরম্।
বিপ্লবীদের
সম্বিত ফিরে এল। তাদের কণ্ঠেও ধ্বনিত হতে থাকল- এগিয়ে চল।
ইংরেজ তুমি ভারত ছাড়ো। করেঙ্গে ইয়ে মরেঙ্গে।- বন্দে
মাতরম্। আবার এগিয়ে যেতে লাগল তারা জলপ্রপাতের বেগে। ওদিকে গুলি বর্ষণ শুরু হয়ে
গেল বৃষ্টির মতো।
উত্তর দিক
থেকে এগিয়ে আসা দলটির পুরোভাগে ছিলেন মাতঙ্গিনী। বয়স বাহাত্তর কি তিয়াত্তর। তবুও
ছুটে চলেছেন উল্কার বেগে। বাঁ-হাতে বিজয় শঙ্খ-ডান হাতে
জাতীয় পতাকা। আর মুখে ধ্বনি- ইংরেজ ভারত ছাড়ো-করেঙ্গে
ইয়ে মরেঙ্গে-বন্দে মাতরম্।
একটি বুলেট
পায়ে লাগতেই হাতের শাঁখটি মাটিতে পড়ে গেল। দ্বিতীয় বুলেটের আঘাতে বাঁ-হাতটা নুয়ে
পড়ল। কিন্তু ওই অবস্থাতেও ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীতে কর্মরত ভারতীয় সৈনিকদের
উদ্দেশ্য করে বলে চলেছেন- ‘ব্রিটিশের গোলামি ছেড়ে গুলি ছোঁড়া বন্ধ
করো- তোমরা সব আমাদের মতো স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে হাত মেলাও।
প্রত্যুত্তরে উপহার পেয়েছিলেন কপালবিদ্ধ করা তৃতীয় বুলেটটি। প্রাণহীন দেহ মাটিতে
লুটিয়ে পড়েছিল। কিন্তু জাতীয় পতাকাটি তখনও তাঁর ডান হাতের মুঠোয় ধরা ছিল।
এইভাবে কত
স্নেহময়ী জননী ও মমতাময়ী ভগিনী যে দেশমাতৃকার চরণে নিজেদের উৎসর্গ করে গেছেন তার
সঠিক ইতিহাস হয়তো কোনদিনও লেখা হবে না।
তথ্য
সংগ্রহঃ shomoynews24.
No comments:
Post a Comment