'প্রাক্তন' সিনেমার সেই গানটা মনে পড়ে?
"কোলকাতা তুমিও হেঁটে দেখো কোলকাতা,তুমিও ভেবে দেখো
কোলকাতা....যাবে কিনা যাবে আমার সাথে" কিংবা "খুঁজে দিতে না পারলে আড়ি
আমার ব্যোমকেশ বক্সীরর বাড়ী..."
তা মশাই নস্টালজিক হয়ে পড়লেন তো? তাহলে চলুন শব্দের মাধ্যমে হেঁটে দেখি
প্রাচীন কোলকাতাকে।
বহু প্রাচীনকাল থেকেই একাধিক জাতি,ধর্ম,ঐতিহ্য, ভাষার সংমিশন প্রাণসঞ্চার করেছে শহরে।ইতিহাসের সাথে হাতে হাত রেখে চলা এই
শহরের প্রানভোমরা তার প্রাচীন স্থাপত্যকীর্তিগুলি;যার কিছু
হেরিটেজ মর্যাদাপ্রাপ্ত, কিছু নয়।তাহলে আসুন সবমিলিয়েই জেনে
নি সেইসব স্থাপত্যের কিছুকে।
রাইটার্স বিল্ডিং -(বিবাদি বাগ)
বাংলা ভাষায় 'মহাকরণ' যা পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনিক কাজকর্মের জন্য
ব্যবহৃত হয় ১৫০ ফুটের এই লাল রঙের বাড়িটি(২০১৪ অব্দি)।প্রকৃতপক্ষে এটি ছিল ইস্ট
ইন্ডিয়া কোম্পানীর থ্রি স্টোরিড অফিস। ডিজাইন করেছিলেন থমাস লিয়ন, তৎকালীন মেম্বার অব কাউন্সিল,রিচার্ড বারওয়েল এর হয়ে,
সালটা ১৭৭৭। গ্রিক- রোমান শিল্পকলার নির্দশন এই বাড়িটির সুন্দর
পোর্টিকো, ১২৮ ফুট লম্বা বারান্দা,৩২
ফুট উঁচু কলামগুলি শোভাবর্ধন করে।এছাড়াও অসাধারণ কারুকার্যের নমুনা রয়েছে ভেতরে
থাকা স্ট্যাচু গুলিতে,যেগুলি তৈরী করেছিলেন উইলিয়াম ফেড্রিক
উডিংটন সাহেব।এর লাল ইটের প্রতি ভাঁজে রয়েছে ঐতিহ্য।
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল-(J.N.Road)
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল,
যার নামকরণ ইংল্যান্ডের কুইন ভিক্টোরিয়ার নামে,কোলকাতার প্রানকেন্দ্রে থাকা মার্বেল পাথরে মোড়া এক প্রাসাদ।গভর্নর
জেনারেল কার্জনের নির্দেশে ১৯০৬ সালে শুরু করা হয়েছিল এর নির্মান,শেষ হয় ১৯২১ সালে।ডিজাইন করেছিলেন উইলিয়াম ইমারসন।৩৩৮ ফিট বাই ২২৮ ফিটের
এই স্থাপত্যের উচ্চতা ১৮৪ ফিট।মারকানা মার্বেলের তৈরী এই স্থাপত্যে সংমিশ্রন ঘটেছে
মুঘল, ,ভেনেটিয়ান,মিশরীয় এবং ইসলামিক
স্থাপত্যের।মূল ডোম টি ১৬ ফুটের।দক্ষিনদিকের ডোমগুলি
Art,Architechture,Justice
এবং Charity কে উপস্থাপিত করে আর উত্তর দিকের
গুলি Motherhood,Prudence আর learning কে।বাইরের
সুদৃশ্য বাগানটি ৬৪ একরের ওপর তৈরী।
এর ভেতরে রয়েছে ২৫ টি গ্যালারি নিয়ে তৈরী মিউজিয়াম (Under ASI)।
যাতে রয়েছে প্রচুর দুঃস্পাপ্য বই থেকে মুদ্রা।
সেন্ট পলস চার্চ- (ক্যাথিড্রাল রোড)
৭ একর জমির ওপর তৈরী ইন্দো-গথিক স্থাপত্যের অন্যতম নিদর্শন (ডিজাইনটির পোষাকি
নাম গথিক রিভাইভাল স্টাইল) ১৮৩৯ সালে এর নির্মাণ শুরু হয় শেষ হয় ১৮৪৭ এ।ডিজাইন
করেন মেজর উইলিয়াম নারিন ফোর্বস এবং সি কে রবিনসন।২৪৭ ফিট বাই ৮১ ফিটের এই
বিল্ডিংটি ২০১ ফিট উঁচু।সেন্ট জনস চার্চের পরিবর্তে এটি তৈরী করা হয়,বিশপ ড্যানিয়েল উইলসন এর
তত্ত্বাবধানে। ভেতরকার ডেকোরেশন পুরোপুরি প্লাস্টিক আর্ট ফর্মের।জানালা টু গম্ভুজ
সবকিছুই ইউরোপীয় এবং ভারতীয় রীতির সংমিশ্রন।
ন্যাশনাল লাইব্রেরি-(আলিপুর)
ভারতবর্ষের সর্ববৃহৎ এবং পৃথিবীর ১৪ তম বৃহৎ
গ্রন্থাগার। এর পূর্ব নাম ক্যালকাটা পাব্লিক লাইব্রেরি(১৮৩৬)।ব্রিটিশরা এর নামকরন
করে ইম্পেরিয়াল লাইব্রেরি।পরে, ১৯৫৩ সালে এর নাম ন্যাশনাল লাইব্রেরি করা হয়।৩০ একর জমির ওপর
সাদা রঙের এই বাড়িটিতে ২.২ মিলিয়নের ওপরে বই রয়েছে।
২০১০ সালে ASI,
এর ১০০০ স্কোয়ার ফুটের এক Hidden chamber এর
সন্ধান পায়। বই ছাড়াও ৮৬ হাজার ম্যাপ,৩২০০ টি পান্ডুলিপি,৪৫ কিলোমিটারের শেল্ফ এবং রিডিং রুম যা ৫০০ জন মানুষ একইসাথে ব্যবহার করতে
পারে।
টাউনহল-(এসপ্ল্যানেড)
রোমান ডরিক স্টাইলের স্থাপত্য ।কনের্ল ডন গারস্টিন
ডিজাইন করেন এই সুদৃশ্য সাদা বাড়িটি(১৮১৩)।এতে খরচ হয়েছিল ৭ লক্ষ টাকা যা একটি
লটারিতে জেতা। প্রকৃতপক্ষে ইউরোপিয়ানদের অনুষ্ঠান এর জন্য তৈরী করা হয়েছিল।এতে
বর্তমানে কিছু দুঃস্পাপ্য বই নিয়ে তৈরী হয়েছে লাইব্রেরী(২০০৪)। আপাতত রয়েছে ১২০০০
বই।
(ছবি ও তথ্য সংগৃহীত)
source: Google
No comments:
Post a Comment