- অয়ন বোস
বর্ষাকাল ব্যাপারটা
সবসময়ই মহা বিরক্তিকর মনে হয় সুতীর্থর। ঠিক অফিসটাইমে বাড়ি থেকে বেরোতেই বৃষ্টি
এসে জামা জুতো ভিজিয়ে দেয়, আবার স্টেশনে পৌঁছে গেলেই ফুলস্টপ। ফলত ট্রেন ধরতে না
পেরে অফিসে লেট এবং বসের খিঁচুনি। রাতে ঠিক অফিস থেকে বেরোনোর সময় এবং স্টেশনে
ট্রেন থেকে নামার সময়ও একই গল্প। বৃষ্টি যেন হাত ধুয়ে পিছনে পড়ে রয়েছে। এছাড়া রাস্তায় অকারণ জ্যাম,দু এক ফোঁটা পড়লেই গাড়ি ঘোড়া নড়তে পারে
না। কুড়ি মিনিটের রাস্তা
লাগে এক ঘন্টা। তার ওপর প্যাচপেচে কাদা আর জমা জল তো আছেই। পালিশ করা জুতো আর
ধোপদুরস্ত জামাপ্যান্টকে নিমেষে স্প্রে প্রিন্ট করায় যাদের জুড়ি নেই। মোটকথা
বর্ষাকাল মানেই ওর মতো ডেলি প্যাসেঞ্জারদের জন্য অশান্তি শুরু।
তো আজকেও বেরোনোর সময়
বৃষ্টি এবং লেট। ট্রেনের পশ্চাৎদেশ দর্শন করে মিনিট কুড়ি বোকার মতো দাঁড়িয়ে থাকার
পর পরের ট্রেন মুখ দেখালেন। উঠতে না উঠতেই ফোনটা পকেটে বাজছে বুঝলো সুতীর্থ। মায়ের
ফোন।
‘শোন না, ছোটমামা বলছিল
একটা ভালো মেয়ের খোঁজ পেয়েছে। ভালো ফ্যামিলি, মেয়েটা স্কুল টিচার। কথা বলছি তাহলে
আমি ।'
উফ এই এক জ্বালাতন
হয়েছে । রাতদিন, সাতদিন এই একটাই কথা। বিয়ে আর বিয়ে। ট্রেন মিস করে এমনিতেই মেজাজ
সপ্তমে, তার ওপর এইসব। রোজকার মতো মাকে কোনক্রমে নিরস্ত করতে হলো। ট্রেনে বেশ ভিড়, ঝুলতে ঝুলতে হাওড়া পৌঁছে সাবওয়ে দিয়ে বেরিয়ে
সুতীর্থ দেখলো বৃষ্টিতে চারদিক ধোঁয়া হয়ে রয়েছে প্রায়। ছাতা আছে ব্যাগে কিন্তু
তাতে বিন্দুমাত্র সুবিধা হবে না। অতঃপর একরাশ বিরক্তি মাথায় চড়িয়ে দৌড়ে পাশে একটা
শেডের তলায় ঢুকতে গিয়ে কয়েক সেকেন্ডে আপাদমস্তক ভিজে গেল। মুষলধারে নামার আর সময়
পেলো না। এমনিতেই এই সপ্তাহে দুটো লেট পড়ে গেছে অলরেডি। গজগজ করতে করতে সিগারেট ধরাতে গিয়ে আবার বিপত্তি। দেশলাইটা পকেটে ভিজে ন্যাতা । ধুস। পাশে একটা ছেলে সিগারেট টানছে
দেখে আগুনটা চাইলো। লাইটার পাশ করতে গিয়ে ছেলেটার চোখে চোখ পড়তেই থমকাল সুতীর্থ।
দেবর্ষি না ? তাই তো মনে হচ্ছে । পরমুহূর্তেই ভাবলো নাও হতে পারে, যখন শেষবার
দেখেছিল তখন ছেলেটা সবে ফাস্ট ইয়ার ছিল। তাও বছর সাতেক আগে। মুখের আদল তো কত লোকের
একরকম হয়। অফিসের শুভ আর ওর পাড়ার লালুদাকেও তো একরকম দেখতে। কদিন আগেই দুজনকে
দুজনের ছবি দেখিয়ে থ করে দিয়েছিল। তো এসব হাবিজাবি ভাবতে ভাবতে প্রায় ফিল্টার পুড়ে
যাওয়া সিগারেটটা ফেলে ঘুরতেই দেখলো ছেলেটি ওর দিকেই তাকিয়ে আছে।
'তীর্থদা? আমি দেবর্ষি
। চিনতে পারছো ?'
চিনতে তো আগেই পেরেছিল
সুতীর্থ , এবার
হেসে বললো ‘ আরে ,তুই
এখানে ? কেমন আছিস ?’
দেবর্ষি বললো ভাল আছি দাদা।
তুমি কেমন আছো ? ‘আমি ভালোই আছি রে। তারপর বল কোথায় চাকরি করছিস ? আইটি তেই আছিস
তো ?'
দাদা একটু তাড়া আছে আমার , তোমার নম্বরটা বদলায় নি তো ? দেবর্ষির
গলায় এড়িয়ে যাওয়ার আভাস পেয়ে ওর কেন জানিনা মনে হলো ছেলেটা কিছু একটা সমস্যায় আছে
এবং সেটা ওকে জানাতে চাইছে না ।
কিন্তু কিছু বলার আগেই
আগেই দেবর্ষির সেল বেজে উঠলো । ‘হ্যাঁ বাবা বলো।’
ওদিকে আর কান দিল না
সুতীর্থ । ফোনের ওপরের ভদ্রলোকের সঙ্গে ওর কেমিস্ট্রি খুব একটা মধুর নয়। ‘বাবা আমি চেষ্টা
করছি….সবাইকে ফোন করেছি...ওদের কাছেও নেই….আরে থাকলে তো টাকার প্রশ্ন
'…. উনি খবর পেলে
জানাবেন বলেছেন..আচ্ছা আমি ফিরছি ।’
ছেঁড়া কথাগুলো জুড়তে
জুড়তে ও বুঝলো আন্দাজটা একশো ভাগ ঠিক , দেবর্ষি কিছু একটা সমস্যায় রয়েছে। এবং এখন
মনে হচ্ছে ব্যাপারটা পারিবারিক।
ফোনটা রাখার পর ম্লান
হেসে দেবর্ষি বললো ‘চলি দাদা, আমি পরে ফোন করে নেব’
‘ দাঁড়া । চললি কোথায় ?
‘ সুতীর্থর গলার স্বর বরাবরই একটু কঠিন , দেবর্ষি থমকাল একটু ।
‘কি হয়েছে আমাকে বল।
দিদি কেমন আছে ?’
কয়েক সেকেন্ড ওর দিকে
চেয়ে থেকে হাউহাউ করে কেঁদে ফেললো ছেলেটা।
‘দিদি ভালো নেই
তীর্থদা। সাত মাসের প্রেগনেন্ট। এদিকে পরশু রাতে রক্তিমদার বাইক একসিডেন্ট হয়েছে।
প্যানক্রিয়াস থেকে কন্টিনিউ ব্লিডিং হচ্ছে। ডক্টর বলতে পারছেন না কিচ্ছু। আজ
দুপুরে অপারেশন হওয়ার কথা। কিন্তু ..’
‘কিন্তু কি ? বল আমাকে
?’দেবর্ষিকে ঝাঁকুনি দিতে শুরু করেছে সুতীর্থ। ‘কিন্তু কি ?’
‘অপারেশন করতে মিনিমাম
দু ইউনিট ব্লাড লাগবে তীর্থদা। রক্তিমদার ব্লাড গ্রুপ ও নেগেটিভ। আমি কাল
বিকেল থেকে ঘুরছি , কিন্তু কিচ্ছু করতে পারছি না দাদা। ডেঙ্গুর সিজন , এমনিতেই
ব্লাড নেই, তার ওপর রেয়ারেস্ট গ্রুপ।’
চোয়াল শক্ত হতে শুরু
করলো সুতীর্থর। ‘কেন তোর বাবা কি করছে ? পারছে না জোগাড় করতে ? এত তালেবর
লোক ?’
‘বাবা এখন আর আগের মতো
নেই দাদা। বয়স হয়েছে ,আর দিদির বিয়ের পর থেকে বাবা বদলে গেছে অনেক।
বাবাই ফোন করে কাউকে
রক্তের জন্য বলেছিল তাই আমি এখানে এসেছিলাম। কিন্তু কোনো কাজ তো হলো না।’
‘তোর বাবার কথা নয়
ছেড়েই দিলাম ।
আমাকে তোর দিদি চেনে না
? তুই চিনিস না ? আমার নম্বর তোর কাছে নেই ?’ ওকে ঝাঁকাতে ঝাঁকাতে পাগলের মতো
চিৎকার করতে শুরু করলো সুতীর্থ।
চেঁচামেচি শুনে আশেপাশে
লোক জমতে শুরু করেছে অলরেডি। আসলে উত্তেজিত হলে ওর গলার আওয়াজ চড়ে যায় সেটা ও
জানে। পরিস্থিতি বুঝে গলা নিচু করে দেবর্ষিকে জিজ্ঞেস করলো , ‘আমায় একটা ফোন
করতে পারলি না তুই ? তোর দিদি করবে না জানি , কিন্তু তুই ? এখন দেখা হওয়ার পর ও
পালাচ্ছিলি ।’
‘আসলে তীর্থদা, তোমাকে
কোন মুখে ...মানে কিভাবে বলবো ?’ আমতা আমতা করতে লাগলো দেবর্ষি।
‘হ্যাঁ সেই। তা বলবি
কেন ? দিদিটা মরে যাক বল ? বাপের মতো নাটকটাই শিখেছিস শুধু ..
কোথায় আছে রক্তিম ?’
‘ অ্যাপোলোতে আছে দাদা।
তুমি যাবে ?’
এরপর সুতীর্থর কোঁচকানো
ভুরু দেখে আর কিছু বলতে সাহস পেলো না দেবর্ষি । এই স্বভাবের সঙ্গে
পূর্বপরিচিতি আছে ওর।
অফিসে ফোন করে আসতে
পারছে না জানিয়ে একটা সিগারেট ধরালো সুতীর্থ। ফোনে ওলা বুক করা হয়েছে, মিনিট
দশেকের মধ্যে এসে পড়বে সেটা। দৈবক্রম বোধহয় একেই বলে। কিছু কিছু মূল্যবান
জিনিস জীবন নিজেই হঠাৎ কেড়ে নেয়। আর যখন সেটার অভ্যাস মানুষ কাটিয়ে ওঠে,
তখনই আবার সামনে এনে দাঁড় করিয়ে দেয়। অদ্ভুত । ওলা এসে গেছে , ওরা উঠে পড়ে তাতে।
রাস্তার যা অবস্থা তাতে যেতে আধঘন্টার বেশি সময় লাগবে মনে হচ্ছে। গাড়ির ঝাপসা
কাঁচের ওপারে অঝোর ধারায় ভিজতে থাকা শহরের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে সুতীর্থ পিছিয়ে
যায় বছর আটেক। দিশারী। নামে কলম্বাস টাইপ ব্যাপারস্যাপার থাকলেও আদতে বাড়ির
গলির বাইরে বিশেষ কিছু না চেনা একটা মেয়ে। আলাপ কলেজে নয়, কর্মক্ষেত্রে। সুতীর্থর
আগের অফিসের দুটো বিল্ডিং পরেই ওর অফিস ছিল। একই পথে যাওয়া এবং ফেরা। প্রথম প্রথম
নিত্যযাত্রীর বন্ধুত্ব, তারপর একসাথে যাওয়া আসা। এবং ধীরে ধীরে প্রেম। সেটা যে
একতরফা নয় সেটা দিশা প্রথমে বুঝতেই দেয় নি। কারণ ও বিশ্বাস করত ওর বাবা এসব
কোনোদিনই মেনে নেবে না। বাবা যা বলবে,যেখানে বলবে সেখানেই ওকে বিয়ে করতে হবে। তাই
সুতীর্থ ওকে মনের কথা জানালেও, দিশা তাতে সায় দেয় নি কোনোদিন। কিন্তু আস্তে
আস্তে যত সময় এগিয়েছে , দিশার সঙ্গে সম্পর্ক আরো গভীর হয়েছে। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে
বেড়েছে দিশার ভয়। ওর ভাই দেবর্ষি জানতো সব। বয়সে ছোট হলেও, ওই গোঁড়া মধ্যযুগীয়
চিন্তাধারার বাড়িতে দিদির একমাত্র সাপোর্টার ওই ছিল। বছর তিনেক পরে দিশার বাবা ওর
বিয়ের ঠিক করেন কোনো উচ্চপদস্থ সরকারি চাকুরের সাথে । এবং মেয়ের কোনো মতামত ছাড়াই।
দিশার মতো উঁচু গলায় কথা না বলা মেয়ে সটান গিয়ে বাবাকে বলে দেয় আমি বিয়ে করলে
সুতীর্থকেই করবো। তাতে কোনো কাজ হয়নি। উল্টে বাড়িতে কার্যত একঘরে করে, দিশার অফিস
, বাড়ি থেকে বেরোনো সব বন্ধ করে দেওয়া হয়। তখন এইরকম এক বর্ষাদিনে একরকম জোর
করেই ওদের বাড়িতে গিয়ে দিশার দাম্ভিক বাবার মুখোমুখি হয় সুতীর্থ। দিশা বারণ
করেছিল অনেক। বাবাকে তুমি চেনো না, আমার বাবা কোনোদিন এটা হতে দেবে না। তুমি
অপমানিত হবে শুধু। তাই হয়েছিল । উনি বলেছিলেন সুতীর্থ নিজের অওকাত ভুলে যাচ্ছে।
ভুলে যাচ্ছে ওর আর দিশার মধ্যের জাতের ফারাক। উনি বেঁচে থাকতে কোনোদিন এটা হতে
দেবেন না। ছোট জাতের রক্ত ওনার পরিবারে উনি বইতে দেবে না কোনোভাবেই। এতএব
বামন হয়ে চাঁদ ছোঁয়ার দুরাশা যেন ও ত্যাগ করে। সুতীর্থ তাতে বিন্দুমাত্র আঘাত
পায়নি। এই সময়ে দাঁড়িয়েও কোনো মানুষের এরকম চিন্তাধারা হতে পারে ভেবে বেশ অবাক
হয়েছিল বটে। তবে থমকেছিলো যখন দিশা ওর প্রশ্নের উত্তরে বলেছিল ,বাবাকে পেরিয়ে আমি
তোমার সাথে ঘর বাঁধতে পারবো না তীর্থ। তুমি চলে যাও।
মাথায় আগুন আর চোখে জল
নিয়ে বেরিয়ে আসার সময় ওর পথ আটকেছিলো দিশা। বলেছিল আমি ভেবেছিলাম আমি পারবো।
কিন্তু পারলাম না। কতবড় পাপ করলাম আমি জানি তীর্থ। পারলে আমাকে ক্ষমা করো।
ওটাই শেষ দেখা ওর দিশার সাথে।
সুতীর্থ শুধু
বলেছিল তুমি আমায় জন্য চেষ্টাটুকুও করলে না দিশা ? এরকমই অঝোর ধারায় বৃষ্টি
নেমেছিলো সেদিন । সুতীর্থর চোখের জল লুকোতে আড়াল দিয়েছিল হয়তো। মনে করিয়ে দিচ্ছিল
অফিস থেকে দিনের পর দিন ব্যাগে ছাতা রেখে কাকভেজা হয়ে দুজনের বাড়ি ফেরা। দিশা
ভিজতে ভালোবাসতো খুব। এরকম একটা বৃষ্টিভেজা সপ্তমী সন্ধ্যেতে মনের সমস্ত আগল
ভেঙে দিশা উপচে পড়েছিল ওর বুকে । বাইরে বৃষ্টি থেমে গেছিল বহুক্ষণ, তবু ভিতরে
ভিতরে ভিজে গিয়েছিল দুজনেই ।চেয়েছিল দিশার সাথে সারাজীবন এভাবেই ভিজতে ।
এরপর এতগুলো বছর কেটে
গেছে, দগদগে ক্ষতগুলোয় পড়েছে সময়ের প্রলেপ। ধীরে ধীরে ফিকে হয়েছে প্রিয় মুখের আদল।
বদলে গেছে আঁকড়ে থাকার অভ্যাস।
যোগাযোগ ছিল না কিছুই। হঠাৎ
দুবছর আগে দেবর্ষি ফোন করে বলেছিল দিশার বিয়ের ব্যাপারে। ব্যাস ওই শেষ।
এসে গেছি দাদা।
দেবর্ষির গলার আওয়াজে চটক ভাঙে ওর, হাসপাতাল এসে গেছে। এরপর অপারেশন শেষ হতে হতে
দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়। ওখান থেকে সব কাজ সেরে যখন বাইরে বেরোলো সুতীর্থ তখন সাড়ে
সাতটা বাজে। রক্তিমের অপারেশন সাকসেসফুল । ডক্টররা আশাবাদী। দু ইউনিট
ব্লাডের মধ্যে এক ইউনিট এক ডাক্তারবাবু জোগাড় করে দিয়েছেন । আর একটা ও দিয়েছে।
রক্তিম আর ওর গ্রুপ এক। ও নেগেটিভ । দিশার বাবা ডোনারের সাথে দেখা করতে চেয়েছিলেন,
কিন্তু ও রাজি হয়নি। দেবর্ষিকে ও আগেই প্রমিস করিয়ে নিয়েছিল যে দিশারী
বা ওর বাবা যেন কোনোভাবেই ওর পরিচয় জানতে না পারে।
রাতে ট্রেন থেকে
স্টেশনে নামতেই একটা অচেনা ল্যান্ডলাইন থেকে ফোন এলো সুতীর্থর মোবাইলে। । ‘তীর্থদা
দেবর্ষি বলছি। বাবা কথা বলতে চাইছে। তাই হাসপাতাল থেকে ফোন করলাম। আমি
তোমার পরিচয় দিইনি। বাবা বলছে শুধু ধন্যবাদ জানাতে চায়।’
পরের তিন মিনিট আর কোনো
কথা বলতে পারেনি সুতীর্থ। শুধু শুনেছে কাঁপা কাঁপা একটা পরিচিত গলা ,আর তাতে একজন
উদ্বিগ্ন বাবার কৃতজ্ঞতা ছাড়া আর কিচ্ছু নেই।
‘আমি জানি না তুমি কে ।
কিন্তু তুমি আমার মেয়ের পরিবারটা মুছে যাওয়ার হাত থেকে বাঁচিয়েছ । তোমাকে ধন্যবাদ
দিয়ে ছোট করতে চাই না বাবা। শুধু বলতে চাই তুমি সারাজীবন ঋণী করে দিলে । ভালো
থেকো, ভগবান তোমার ভালো করুন।'
ফোনটা কাটার পর ও
দেখলো, বাইরে তখন আবার বৃষ্টি নেমেছে। বৃষ্টি নেমেছে সুতীর্থর ভিতরেও । এমন বৃষ্টি
বহুবছর আগের এক সপ্তমীর রাতে নেমেছিল । ছাতা না খুলেই ভিজতে ভিজতে বাড়ির
দিকে হাঁটতে শুরু করলো ও। আজ নিজেকে অদ্ভুত হালকা লাগছে। বহুবছর শার্টের নিচে
লুকিয়ে বয়ে নিয়ে চলা একটা অসুখ আজ যেন হঠাৎ মিলিয়ে গেছে।
রাতে খাওয়ার সময়
মাকে বললো ,’ছোটমামা কোন মেয়েকে দেখেছিল বলছিলে না মা ? কথা বলতে পারো। আমি
রাজি।’
বৃষ্টি এখন একটু ধরেছে।
কাল সকালে আবার হবে হয়তো। হোক । বর্ষাকালটা এখন আর অতটা খারাপ মনে হচ্ছে না
সুতীর্থর।
No comments:
Post a Comment