মা দুগ্গার চোখটা কি ছলছল করছে?
হুমম।করছে।বিদায়বেলায় মা তো আর মা নয়।মা এখন মেয়ে।যে মেয়ে বাপের বাড়ি থেকে ফিরে
যাচ্ছে শ্বশুরবাড়িতে।নন্দিনীর চোখটাও ঝাপসা হয়ে আসে মাকে বরণ করতে করতে।আজ রাতেই
তার ফ্লাইট।ঠাকুর ভাসান চলে গেলে নন্দিনীও বাপের বাড়ি থেকে ফিরে যাবে শ্বশুরবাড়িতে।বিসর্জনের
সুর তার হৃদয়ের সঙ্গে মায়ের হৃদয় যেন একসুতোয় বেঁধে দিয়েছে আজ!
বিতনু
লাগেজ নিয়ে ট্রেনে উঠে উইন্ডো সিটে এসে বসে।ট্রেনের জানলার বাইরে মেঘা।বিতনু হাত
রাখে মেঘার হাতে।মেঘার চোখের জল তখন বাঁধ ভেঙেছে। 'খুব জলদি আবার কলকাতা ফিরব।এমন করিস না বাবু!যেতে
পারব না তাহলে!' বিতনু ভেজা গলায় বিড়বিড় করে। মেঘা চুপ করে থাকে।হুইসেল দিয়ে ট্রেন
ছাড়ে।মেঘার হাতটা ছেড়ে যাওয়ার আগে একবার শক্ত করে আঁকড়ে ধরে বিতনু।ট্রেন যতক্ষণ না
দূরের বাঁকে বিন্দু হয়ে মিলিয়ে যাচ্ছে ততক্ষণ মেঘা একবুক শূন্যতা নিয়ে চেয়ে থাকে
ট্রেনের দিকে।এটা তাদের একসঙ্গে প্রথম পুজো ছিল।বাইরে গঙ্গার ঘাটে তখন প্রতিমা
বিসর্জন চলছে।
ছেলের ব্যাগ প্যাক করতে করতে আঁচলে চোখটা মুছে নেন আরতি।পুজো শেষ।আর শেষ ছেলের পাঁচদিনের ছুটিও।ছেলে ফিরে যাচ্ছে অন্য রাজ্যে কর্মস্থলে।মুড়ির মোয়া আর নারকেল নাড়ুর বোয়ামদুটো ব্যাগে রেখে কাঁপা গলায় আরতি বলেন 'বাবু এগুলো খেয়ে নিস!আর তো তোকে দু বেলা নিজের হাতে করে খাইয়ে দিতে পারব না! রোজ মনে করে ফোন করিস!'
ছেলের ব্যাগ প্যাক করতে করতে আঁচলে চোখটা মুছে নেন আরতি।পুজো শেষ।আর শেষ ছেলের পাঁচদিনের ছুটিও।ছেলে ফিরে যাচ্ছে অন্য রাজ্যে কর্মস্থলে।মুড়ির মোয়া আর নারকেল নাড়ুর বোয়ামদুটো ব্যাগে রেখে কাঁপা গলায় আরতি বলেন 'বাবু এগুলো খেয়ে নিস!আর তো তোকে দু বেলা নিজের হাতে করে খাইয়ে দিতে পারব না! রোজ মনে করে ফোন করিস!'
খালি মন্ডপ।শূন্য মঞ্চে ছড়ানো পাঁচদিনের পুজোর ফুল।একটু আগের
সিঁদুরখেলার সিঁদুরের ছিটে চারপাশে।একটা প্রদীপ জ্বলছে এককোণে।কতক্ষণ জ্বলবে কে
জানে!নিভে যাওয়ার সময় নিকট।
পুজো শেষ হলে কি শুধু পুজোই শেষ হয়?না মনে হয়।শেষ হয় আরো অনেক কিছু।অনেক কিছুই।
No comments:
Post a Comment