ব্লগ-টগ

প্রকাশ্যে আত্মপ্রকাশের ঘরোয়া সূত্র

Post Page Advertisement [Top]

To Place your advertisement here call - +917980316633/+918145704098

কাছে পিঠে বেড়ু বেড়ু - ব্রতজিৎ নস্কর

বাঙালিদের বেড়ানো মানেই দী-পু-দা। মানে ওই আর কি, দীঘা-পুরী-দার্জিলিং। কিন্তু এই ধারণাটাকে এবার একটু বদলাবার সময় চলে এসেছে। বেড়ানোর জন্য আগে যেমন প্ল্যান প্রোগ্রাম করতে হত এখন সেসবের বালাই আর নেই বললেই চলে। হাতে ২-১ দিন থাকলেই ব্যাস। চলো ঘুরে আসি। আমি আজ এই পোস্টে বেশ কিছু কাছাকাছির মধ্যে জায়গার নাম বলব যা পকেটকেও বাঁচাবে আবার চোখ-মনের শান্তিও দেবে। আর হ্যাঁ, বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য – সপরিবারে যেতে তো পারেনই, বন্ধু-বান্ধবী নিয়েও দিব্বি ঘুরে আসতে পারেন এই সব জায়গায়। 


জি-প্লট গ্রাম, পাথরপ্রতিমা, দক্ষিণ ২৪ পরগণা

দীঘা-পুরী বাদ দিয়েও যাঁরা একটু অফবিটে সমুদ্র কি কিনারে যেতে চান তাঁদের জন্য রইল এই জায়গাটি। ঠিকানা – জি প্লট (পাথরপ্রতিমা ব্লক)। কিভাবে যাবেন? খুব সোজা। শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখা থেকে ট্রেনে উঠে পড়ুন। টিকিট কাটুন লক্ষ্মীকান্তপুরের। ভাড়া ২৫ টাকা। ঘন্টা দুয়েক ট্রেনে চেপে বাদাম ভাজা খেতে খেতে নেমে পড়ুন লক্ষ্মীকান্তপুরে। কাছেই বাসস্ট্যান্ড। গন্তব্য রামগঙ্গা ঘাট। ভাড়া ২৫-৩০ টাকার মতো নেবে। রামগঙ্গায় পৌঁছে বোটে করে পাড়ি দিন বুড়োবুড়ির তট। এই যাত্রাটি একটু সময়বহুল। ঘন্টা ৩ মতো। তবে ভাড়ার বিচারে খুবই কম। মাত্র ১৫টাকা। বোটযাত্রাটি অসম্ভব সুন্দর। এখানেই আপনার চোখ জুড়িয়ে যাবে। বি.দ্র. হেডফোন নিতে ভুলবেন না। বুড়োবুড়ির তটে পৌঁছে সেখান থেকে সীতারামপুর হয়ে জি-প্লট গ্রাম। এই পথটির জন্য একটা ইঞ্জিন ভ্যান আপনাকে রিজার্ভ করতে হবে। কমবেশি ২০০টাকা মতো পড়বে। ব্যাস। পৌঁছে গেলেন জি-প্লট গ্রামে। পৌঁছে তো গেলেন, থাকবেন কোথায়? কোনো চিন্তা নেই। ওখানে রয়েছে বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশনের একটি শাখা। ওখানে চাইলে থাকতে পারেন। তবে নির্দিষ্ট কোনো রেট নেই। এছাড়া একটু আসে-পাশে খোঁজ নিলে ছোটখাঁটো অনেক জায়গারই খোঁজ পাবেন থাকা খাওয়ার। এমনকি অনেক জায়গায় রান্নারও ব্যাবস্থা আছে। এবারে আসি কি কি দেখতে পাবেন। না না, প্রকৃতি ছাড়া এখানে দেখার আর কিছু নেই। এমন নিস্তব্ধ পরিবেশ আপনি চট করে খুঁজে পাবেন না। সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত তো রয়েছেই, তার সাথে পাবেন লাল কাঁকড়াদের ঘর-সংসার, শিহরণ জাগানো সমুদ্র গর্জন, ঝাউ বনের শন-শন আওয়াজ, ঝি-ঝি পোকার চিৎকার আর হ্যাঁ ভাগ্য প্রসন্ন থাকলে বাঘ মামার দর্শনও অসম্ভব নয়।

ক্রম-বর্ধমান, বর্ধমান

আমি দক্ষিণের বাসিন্দা। তবে পড়াশুনোর সূত্রে আমাকে আসতে হয়েছে বর্ধমানে। প্রথম প্রথম শহরটা ঘিঞ্জি মনে হলেও ক্রমশ এর প্রাচীনত্ব আমাকে অবাক করেছে। খুবই প্রাচীন শহর এই বর্ধমান। এর পরতে পরতে লুকিয়ে আছে নানা ইতিহাস। আমি শুধু বেড়ানোর জায়গাগুলো নিয়েই এখানে লিখছি। ইতিহাস বিষয়ে জানতে হলে বই পাওয়া যায়, পড়ে দেখে নিতে পারেন। কিভাবে আসবেন সেটা আগে একটু বলি – ধর্মতলা থেকে SBSTC BUS পাওয়া যায়। প্রতি ১৫ মিনিট অন্তর ছাড়ে। সকাল ৫টা থেকে রাত ৮.৩০ অব্দি। ধরে নিন। ভাড়া ৭৫ টাকা, A/C হলে ১৭৫ টাকা। ২ঘন্টা লাগবে বর্ধমান শহরে পৌঁছাতে। লাস্ট স্টপ নবাবহাট, নেমে পড়ুন। তারপর ওখানেই কোনো টোটোর সাথে কন্ট্রাক্ট করে নিন। ট্রেনেও আসতে পারেন। হাওড়া থেকে যেকোনো বর্ধমানগামী ট্রেন ধরে নিন। ভাড়া ২৫ টাকা। এক্সপ্রেস হলে ৫০টাকা। স্টেশনে টোটো পেয়ে যাবেন। এবার আসি ঘোরার জায়গাগুলোয় –

১। ১০৮ শিবমন্দির
২। কঙ্কালেশ্বরী কালীবাড়ি
৩। কাঞ্চননগর গেট
৪। বারদুয়ারি
৫। সদরঘাট
৬। দুর্লভা কালীবাড়ি
৭। ওং হিং ক্লিং কালীবাড়ি
৮। কমলাকান্তের কালীবাড়ি
৯। সর্বমঙ্গলা কালী মন্দির
১০। মোটা শিবতলা
১১। খক্কর সাহেবের দরগা
১২। শের আবগানের সমাধি
১৩। নবাববাড়ি
১৪। কল্পতরু উদ্দান


এবারে আসি শহরের মধ্যে –
১। কৃষ্ণসায়র পার্ক
২। সায়েন্স সিটি
৩। মেঘনাদ সাহা তারামণ্ডল
৪। রমনার বাগান
৫। ক্লক টাওয়ার
৬। কার্জন গেট
৭। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়
৮। রাজবাটি
এতো গুলো দেখতে দেখতে আশা করি হাঁপিয়ে উঠবেন। তাও দুদিন বর্ধমানে থেকে ঘুরে দেখলে ভাল লাগবে। ভালো হোটেল আছে এখানে। হোটেল নীলম বা মৃগয়া –র সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।




কৈখালি , মাতলা, দক্ষিণ ২৪ পরগণা
 এবার আসি যারা লং ড্রাইভ ভালবাসেন তাঁদের কাছে। আমিও মোটরবাইক চালাতে বেশ ভালোই বাসি। আপনাদের জন্য রইল এই ট্যুরটি। সপরিবারে যেতেই পারেন এখানে। তবে নিজের সাথে নিজে যদি একটু সময় কাটাতে চান তাহলে একদিন চুপু চুপি বেরিয়ে পড়ুন। আশা করি খারাপ লাগবে না। যাওয়ার রাস্তা – শিয়ালদহ থেকে বাইপাস ধরে কিম্বা মূল রাস্তা ধরে বারুইপুর। সেখান থেকে দক্ষিণ বারাসত ছাড়িয়ে জয়নগর রোড ধরে নিমপিঠ আশ্রম। মোটামুটি ৬০ কিলোমিটারের রাস্তা, ঘন্টা ৩ লাগবে। সেখান থেকে কৈখালি। ৩০ কিমি। ১ ঘন্টার পথ। মাতলা নদীর একেবারে কোলে গিয়ে পড়বেন। ব্যাস, এবার শান্ত হয়ে বসে একটু নিজের সাথে নিজে সময় কাটিয়ে নিন। চাইলে মাতলা পারাপারও হতে পারেন। লঞ্চের ব্যবস্থাও আছে, একটু কথা বলে রাজি করাতে পারলেই ঘুরে নিন কুলতলি বিট। ২ঘন্টার নৌ-সফর। মনটা ফুরফুরে করে ফিরে আসুন আশ্রমে। খাওয়া-দাওয়া ওখানেই পেয়ে যাবেন। চাইলে ওই দিনই ফিরত আসতে পারেন অথবা রাতটা আশ্রমে কাটিয়ে পরের দিনও ফিরতে পারেন।



আজকের আপাতত একটুকু। মাত্র তিনটে জায়গার খোঁজ দিতে পারলুম আপনাদের। আরো রয়েছে কাছেপিঠে অনেক জায়গা। সব একবারেই জানিয়ে দেব? না না ... একটু অপেক্ষাই না হয় করলেন। ঘুরে এসে জানাতে ভুলবেন না। পরের বার থাকবে আরো কিছু জায়গার খোঁজ। আপাতত...আসি।




No comments:

Post a Comment

Bottom Ad [Post Page]

To Place your advertisement here call - +917980316633/+918145704098