![]() |
GKCIET Student Movement |
যাদবপুর, প্রেসিডেন্সি, কলকাতা মেডিকেল কলেজের
পর এবারে মালদার গনিখান চৌধুরী ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ(GKCIET)
সরকারের অদূরদর্শী মনোভাব, প্রতারণা এবং উদাসীনতার শিকার এই কেন্দ্রীয় সরকার
এফিলিয়েটেড(AICTE Approved) কলেজটি। আন্দোলনের এই
বহমান স্রোতে গনিখান চৌধুরী অথরিটির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শামিল এই কারিগরী কলেজের
পড়ুয়ারা।
এই কলেজের প্রায় ৮০০ এরও অধিক ছাত্রছাত্রীর ৪ থেকে ৬ বছরের জীবন গড়ে তোলার
মহামূল্যবান সময়কে নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। গনিখান চৌধুরী কলেজের
আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বললো ব্লগটগ। তাদের পক্ষ থেকে পড়ুয়াদের সমস্ত দাবি দাওয়া
এবং সমস্যার কথা তুলে ধরলেন আন্দোলনে প্রথম থেকে যুক্ত মেকানিক্যাল বিভাগের শাইন
জাহেদি।
![]() |
শাইন জাহেদি |
ব্লগটগ- আপনাদের এই অবস্থান বিক্ষোভ-এর কতদিন হল?
জাহেদি- মূলত এটা আমাদের দ্বিতীয় দফার আন্দোলন। প্রথম দফায় আমরা টানা ১৬ দিন
অনশনে বসেছিলাম। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাননীয় জেলা শাসক মহাশয় আমাদের লিখিত
প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে সব সমস্যার সমাধান হবে। ফলে আমরা অনশন তুলে নিয়েছিলাম।
কিন্তু আজ দেড় মাস অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষের তরফে কোনো হেলদোল
দেখা দেয়নি বলে আমরা পুনরায় দ্বিতীয় দফায় আন্দোলনে শামিল হয়েছি। এই দফায় আমরা
আপাতত অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেছি। আমাদের এই বিক্ষোভ আজ তৃতীয় দিনে পড়লো। প্রশাসন
দাবি না মানলে আমরা ভবিষ্যতে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যেতে বাধ্য হবো।
![]() | |
|
ব্লগটগ- কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে আপনাদের মূল দাবিদাওয়াগুলো কী কী?
জাহেদি- আমাদের মূলত তিনটি দাবি রয়েছে.. যা কীনা অত্যন্ত ন্যায্য বলে আমরা মনে
করি। প্রথমত, উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীদের বৈধ সার্টিফিকেট প্রদান করতে হবে।
এই কলেজ প্রথম শুরু হয়েছিল মডিউলার প্যাটার্নে। ২+২+২ যেখানে প্রথমে বলা হয়েছিল
শুরুর ২ বছর একটি কোর্স চলবে যা কীনা সার্টিফিকেট কোর্স.. এবং এটি কে ITI বা ভোকেশনাল সমতুল্য করার কথা ছিল। তারপর ২ বছরের ডিপ্লোমা এবং শেষ ২ বছর
বি-টেক। এই হিসেবেই ভর্তিপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। আমরা যখন এই সার্টিফিকেট নিয়ে
কোথাও কোনো চাকরির ইন্টারভিউয়ে যাচ্ছি তখন আমাদের অত্যন্ত পরিষ্কারভাবে জানিয়ে
দেওয়া হচ্ছে যে এই সার্টিফিকেটটি ITI বা ভোকেশনাল সমতূল্য
নয়। এটা একটা মস্ত জালিয়াতি। ITI বা ভোকেশনাল কোর্স না করলে
পরবর্তী ডিপ্লোমা কোর্সটিও কোনোমতেই বৈধ নয়। এখানে এমনও পড়ুয়া রয়েছে যারা ডিপ্লোমা
করে বি-টেক এ ভর্তি হয়েছে অথচ তখন ম্যাকাউট বলছে আমরা পুরোনো ছাত্রদের ভর্তি নেব
না কারণ তাদের কোর্সগুলোতে অনেকরকম গাফিলতি রয়েছে। সেই সঙ্গে আপত্তি জানিয়ে তারা
আরও বলে যে যেহেতু তোমরা মানব সম্পদ উন্নয়ন বিভাগের আওতায় ভর্তি হয়েছিলে তোমাদের
সব সমস্যার কথা তাদের গিয়ে খুলে বলো। এর সাথে সাথেই আমাদের সমস্যার কথা কলেজ
কর্তৃপক্ষকে জানালে কর্তৃপক্ষ সরাসরি অস্বীকার করে বলছেন যে তারা নাকি এই বিষয়ে
কিছুই জানেন না এবং তাদের এই সমস্যা সমাধানে কোনো কিছুই করণীয় নেই। ফলে আমাদের
চাকরি পাওয়া বা ভবিষ্যত পুরোপুরিভাবে অনিশ্চয়তার সুতোয় ঝুলছে। এই পরিস্থিতি থেকেই
আমরা আন্দোলনে নেমেছি।
![]() | |
|
ব্লগটগ- তাহলে বলতে চাইছেন যে - কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ রক্ষা বিষয়ে
কোনোভাবেই চিন্তিত নন?
জাহেদি- একেবারেই না। কলেজ কর্তৃপক্ষ আমাদের পুরোপুরিভাবেই অস্বীকার করছেন। MAKAUT(maulana abul kalam azad
university of technology) তরফেও কোনোরকম সহযোগিতা পাচ্ছি না আমরা।
একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারও মুখে কুলুপ এঁটেছেন। আমাদের সমস্যাদি সম্পর্কে সরকার
প্রবলভাবেই উদাসীন।
![]() | |
|
ব্লগটগ- আন্দোলন সম্পর্কিত পরবর্তী পদক্ষেপ কী?
জাহেদি- আমরা জেলা শাসককে সমস্ত বিষয়টি জানিয়ে চিঠি দিয়েছি। সাতদিনের মধ্যে
আমাদের যাবতীয় দাবিদাওয়া পূরণ না হলে আমরা পুনরায় অনশনের পথেই হাঁটবো। এর সাথে
সাথেই চলবে পথসভা, রোডরেলি এবং পথ অবরোধ পর্যন্ত যেতে পারি। আমরা এখনো সমাজের
বাকি স্তরের মানুষের কাছ থেকে সাড়া পাইনি। যেমনটা পেয়েছে মেডিকেল কলেজ। আমাদের এটা
গণদাবি। কারণ আমরা কর্তৃপক্ষের প্রতারণার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে রাস্তায় নেমেছি। ৮০০ জন
ছাত্রছাত্রী নিয়ে এই জালিয়াতির বিরুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছি। যারা কলেজ পাস আউট এবং একই
সমস্যায় ভুক্তভোগী তাদেরকে বহিরাগত বলে কলেজ কর্তৃপক্ষ ঢুকতে দিচ্ছে না।
![]() | |
|
এই
আন্দোলন যাতে ছড়িয়ে না পড়ে তাই জন্য কর্তৃপক্ষ সচেষ্ট। সমাজের সকল স্তরের মানুষকে
আমরা বলতে চাই, উচ্চশিক্ষায় সরকারি প্রতারণার বিরুদ্ধে আমরা
লড়াই করছি। তাই সকল রাজনীতি- দলমত নির্বিশেষে আমাদের পাশে এসে দাঁড়ান। আমরা যাতে
এই প্রতারণার হাত থেকে পরিত্রাণ পাই এবং আগামীতে যাতে এই কলেজের ছাত্রছাত্রীরা
সমাজের বিভিন্ন অংশে চাকরি করে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ লাভ করে সেই জন্যই আমাদের এই মরণপণ
সংগ্রাম।
![]() |
GKCIET Student Movement |
#SaveGKCIET
লেখায় - কিংশুক সিংহ
No comments:
Post a Comment