এই যে শুনছেন, এই যে!
হ্যাঁ! আপনাকেই বলছি,
হ্যাঁ! আপনিই,
সেই আগের বছর বইমেলা থেকে আপনাকে খুঁজে চলেছি।
আগের বছর শীতের শেষে, লেপ কাঁথায় মুড়িয়ে তুলে দেব ভেবেছিলাম,
পারলাম না।
সেই বছরেই ইউনিভার্সিটির গেটের বাইরে,
ফুচকাওয়ালার দোকানে, আপনার উদ্বেলিত মুখ দেখেছিলাম।
বইমেলায় তো ঠোঁটের ওপর তিল দেখিনি,
চোখ পরেনি হয়তো।
নূতন সেমেস্টারের শুরুয়াতে,
পুরানো বইপত্তরের সাথে বস্তাবন্দি করব ভেবেছিলাম,
পারলাম না।
তারপর থেকে খুঁজে চলেছি,
বইমেলার মাঠ, ফুচকাওয়ালার ঠেলা,
ইউনিভার্সিটির গেট সর্বত্র, পাগলের মত।
আজ ৫ মাস ১৭ দিন পর দেখা,
এই চৌমাথার মোরে সপ্তাহে পাঁচ দিন নিয়ম করে বিকেলে অপেক্ষা করেছি,
কৃষ্ণচূড়ার নীচে বাদামওয়ালার থেকে দুটাকার বাদাম,
এক কাপ চা, দুটো সিগারেট, আর নিরন্তর অপেক্ষা।
এর মধ্যে কী আপনি মার্কেটে চোখের সামনে দিয়ে ধূমকেতুর মতো বেরিয়ে গিয়েছিলেন?
মনে পড়ছে না।
আচ্ছা! বইমেলায় আপনি যে কবিতার বইটা কিনেছিলেন,
পুরোটা পরে ফেলেছেন?
জানেন! এর মধ্যে দুদিন, অফ পিরিয়ডে বসে হিজিবিজি লিখেছি,
বুনো গোলাপের গন্ধ,
তোমার খোঁপায় মাধবীলতার আলিঙ্গন,
বিকেলের নরম রোদ মাখা তোমার মুখে আলতো চুম্বন,
বসন্ত আসছে, তুমিও আগমনী সুর বাঁধছ,
আমি ভোরের বাতাসে জলহীন মাছের মতো খাবি খাচ্ছি,
আচ্ছা! এসবের কি কিছু মানে থাকতে পারে!
একটা মেয়ে, ৫ মাস আগে কিচ্ছুক্ষণের দেখা,
বুকের ভেতর ঝড় তুলে দেওয়া হাসি,
শ্রাবনের বিকেলের জমাট বাঁধা মেঘ তোমার বুকে নেমে আসছে
একলা ব্যালকনি তোমার আবরণে সন্ধ্যা আলো মাখছে
নীলাভ হাসির আবছায়াতে
অসম্পূর্ণ সাক্ষাতের শামুক সিঁড়ি বেয়ে উঠছে
প্রথম আলাপের ধূমায়িত রাত্রিবাসের অপেক্ষায়
হাতেবাঁধা সময়ের চিত্রায়নে
চিত্রকর এঁকেছে একমুঠো বুনো গোলাপ,
ঘুম ভাঙছে রাতের কুয়াশা মাখা ভোর
ফুসফুস ভর্তি পাহাড়ি গন্ধে,
উপহারে পাওয়া দীর্ঘ কবিতার গভীরতা
আত্মসমর্পণ।
No comments:
Post a Comment